সড়ক ও জনপথ বিভাগের অনুমতি ছাড়াই বগুড়ার আদমদীঘির কদমা মৎস্য খামার এলাকায় ব্রিজ সংলগ্ন সড়কের দুই পাশের সরকারি গাছ কাটা হচ্ছে।
খায়রুল ইসলাম নামে স্থানীয় এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের নেতৃত্বে ওই এলাকার আব্দুস সালাম নামের এক কাঠ ব্যবসায়ী গাছগুলো কাটছেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। কয়েক দিনে প্রায় ১২টি গাছ কাটা হয়েছে। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে বগুড়া সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সুলতানা খানমের নেতৃত্বে কেটে রাখা ১০টি গাছ জব্দ করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ১৬ বছর আগে উপজেলার সান্তাহার ইউপির দমদমা গ্রামের ২৮জন যুবকরা মিলে সড়কের দু’পাশে দেড় শতাধীক ইউক্যালেপ্টাস গাছ রোপন করেন। তাঁরা নিজ উদ্যোগে গাছগুলো পরিচর্যাও করেন। কাউকে না জানিয়েই হঠাৎ বুধবার সকাল থেকে আব্দুস সালাম গাছগুলো কাটতে শুরু করেন। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে অবসরপ্রাপ্ত ওই শিক্ষক ও কাঠ ব্যবসায়ীকে গাছ কাটতে নিষেধ করেন।দমদমা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আতোয়ার রহমান বলেন, ‘গাছগুলো আমার ছেলে শাহরিয়ার কবির শিপলুসহ আমার মহল্লার প্রায় ২৮জন যুবক রোপন করেন। কিন্তু তাদের না জানিয়েই গাছগুলো কাটা শুরু করেন।
পরে সালামের সাথে কথা বলে জানতে পারি দমদমা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক খায়রুল ইসলাম তাকে গাছগুলো কাটতে বলেছেন। অনুমোদন ছাড়াই বৃক্ষরোপনকারিদের না জানিয়ে তিনি গাছগুলো কাটা অন্যায় এবং অপরাধ করেছেন। তার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য জোড় দাবী জানাচ্ছি।’জানতে চাইলে আব্দুস সালাম জানান, তিনি গাছগুলো কিনে নিয়েছেন মাত্র। গাছগুলো কাটতে দমদমা পূর্বপাড়া মসজিদের নামে একটি দরখাস্ত দেওয়া হয়। এরপর সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে তাদের একটি কাগজ দিয়েছে। গাছগুলো কাটার কাগজ তার কাছে রয়েছে।কিন্তু তিনি সেই কাগজ কাউকে দেখাতে রাজী নয়।অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক খায়রুল ইসলাম জানান, গাছগুলো মসজিদে দেওয়া হবে।এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসা আদমদীঘি থানার উপ পরিদর্শক মানিক কুমার বলেন,আব্দুস সালাম অনুমোদনের কোনো কাগজ দেখাতে পারেন নি। গাছ কাটতে নিষেধ করা হয়েছে।
সেই সাথে সংশ্লীষ্ট দপ্তরকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। তারাই পরবর্তী পদক্ষেপ নিবেন।উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান পিন্টু বলেন, সড়কে যে কেউ গাছ লাগাতে পারবে তবে দরপত্র ছাড়া কেউ কাটতে পারবেন না। তারা যে কাজটি করেছেন এটি রিতিমতো অপরাধ। তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা হওয়া উচিৎ। তা না হলে আরো বেশি অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।জানতে চাইলে আদমদীঘি উপজেলা বন কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা (ইউএনও) জানান, বিষয়টি দেখা হবে।বগুড়া সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সুলতানা খানম জানান, ওই সড়কে গাছ কাটতে তাঁরা কাউকে অনুমোদন দেন নি। অবৈধভাবে গাছ কাটায় বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাস্থল থেকে ১০টি গাছ জব্দ করা হয়েছে। তদন্তপূর্বক জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।