জাতীয় তথ্য বাতায়নে তথ্য পাচ্ছে না নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার প্রায় সাড়ে তিন লাখ জনসাধারন। জাতীয় তথ্য বাতায়নের চাটখিল উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর ও ইউনিয়ন পরিষদ এবং চাটখিল পৌরসভার পোর্টালে গিয়ে দেখা যায় এসব পোর্টালে যথাযথ তথ্য নেই। কিছু তথ্য থাকলেও তা ভুলে ভরা।
জাতীয় তথ্য বাতায়নে তথ্য পাচ্ছে না নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার প্রায় সাড়ে তিন লাখ জনসাধারন। জাতীয় তথ্য বাতায়নের চাটখিল উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর ও ইউনিয়ন পরিষদ এবং চাটখিল পৌরসভার পোর্টালে গিয়ে দেখা যায় এসব পোর্টালে যথাযথ তথ্য নেই। কিছু তথ্য থাকলেও তা ভুলে ভরা।
চাটখিল উপজেলা প্রশাসন ওয়েব পোর্টালে গিয়ে দেখা যায়, (ওয়েব পোর্টালে প্রবেশের স্কীন ভিডিও প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষণ করা আছে) উপজেলা পরিষদের সাংগঠনিক কাঠামো বিবরনীতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সভাপতি, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সহ উপজেলার ৯ ইউনিয়নের ৯ জন চেয়ারম্যান সদস্য হিসেবে রয়েছেন।
তবে অবাক করার বিষয় গত ২০২১ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ১নং সাহাপুর ইউনিয়নে মো. আবদুল্ল্যা খোকন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেও তার নাম উপজেলা সাংগঠনিক কাঠামোতে অন্তভূক্ত করা হয়নি। সাবেক চেয়ারম্যান মো. গোলাম হায়দার কাজলের নাম বিদ্যমান রয়েছে। একই ভাবে ২নং রামনারায়নপুর ইউনিয়নে মো. হারুনুর রশিদ (বাহার) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সেখানে সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলম চৌধুরীর নাম বিদ্যমান, ৫ নং মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে মেহেদী হাসান বাহালুর নির্বাচিত হলেও তার পরিবর্তে সাবেক চেয়ারম্যান মো. সহিদ উল্যা’র নাম অন্তভূক্ত রয়েছে।
এছাড়া অর্থ, বাজেট, পরিকল্পনা ও স্থানীয় সম্পদ আহরণ কমিটির কার্য বিবরণীতে জালিয়াতি স্পষ্ট প্রতীয়মান। ২নং রামনারায়নপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলম কে এই কমিটির সদস্য দেখিয়ে তার স্বাক্ষর জাল-জালিয়াতি করে গত বছরের ১০ আগস্ট অনুষ্ঠিত সভার কার্য বিবরনী অনুমোদন করা হয়। অথচ শাহ আলম গত ২০২১ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত হন। এই ইউনিয়নে তখন মো. হারুনুর রশিদ (বাহার) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মো. কামাল সামছুল ইসলাম বদলি ও ডুপ্লিকেট মেশিন অপারেটর বেলায়েত হোসেন অবসরে চলে গেলেও তাদের নাম ওয়েব পোর্টালে কর্মচারী হিসেবে এখনো অন্তভুক্ত রয়েছে।
চাটখিল থানার ওসি মো. আবুল খায়ের এবং ওসি (তদন্ত) হুমায়ন কবির প্রায় দুবছর আগে বদলি হয়ে গেলেও ওয়েব পোর্টালে তাদের কে ওসি এবং ওসি (তদন্ত) হিসেবে দায়িত্বরত দেখাচ্ছে। যেন কোন কর্মকর্তা বদলি হয়ে গেলে তার স্থলে আসা কর্মকর্তার দায়িত্ব কেবল চেয়ার বুঝে নেওয়া। অন্য কোন দায়িত্বের ধার-ধারে না কর্মকর্তারা।
অপরদিকে উপজেলা তথ্য কেন্দ্রের ওয়েব পোর্টালেই কোন তথ্য নেই। উপজেলা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের কর্মকর্তা প্রীতি রঞ্জন নাথ ১বছর আগে বদলি হয়ে গেলেও নতুন কর্মকর্তার নাম পরিচয় ওয়েব পোর্টালে নেই। উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা এবিএম কামরুজ্জামানও ৩ বছর আগে বদলি হয়ে যান। তবে উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের ওয়েব পোর্টালে তার ব্যক্তিগত নাম্বার ও নাম পরিচয় এখনো বিদ্যমান। তার স্থলে যোগদানকারী কর্মকর্তা আজগর আলীর যেন এদিকে কোন মনযোগই নেই।
একইভাবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যায়ের ওয়েব পোর্টালের নাম্বারটি বন্ধ তবে এখানেও সাবেক কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেনের পরিচয় রয়েছে। বর্তমান কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামাল হোসেনের নাম পরিচয় কিংবা যোগাযোগের কোন নাম্বার নেই। উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসের ওয়েব পোর্টালে দেওয়া কর্মকর্তার নাম্বারে কল দিলে এক নারী ফোন রিসিভ করে জানান এটি ভুল নাম্বারে কল দেওয়া হয়েছে। বন্ধ রয়েছে উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসের নাম্বারটিও।
এছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আবেদন করতে গিয়ে দেখা যায় সাবেক চেয়ারম্যানদের এখনো নিবন্ধক হিসেবে দেখানো হচ্ছে। দায়িত্বরত ইউনিয়ন চেয়ারম্যানেরা সাবেক চেয়ারম্যানদের নামের উপরই স্বাক্ষর করেন।
এবিষয়ে ১নং সাহাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল্যা খোকনের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি সবেমাত্র অবগত হয়েছেন বলে প্রতিবেদক কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এবিষয়ে তিনি এখন কোন মন্তব্য করতে পারবেন না। ২নং রামনারায়নপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ বাহার কে বারবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি এবং ৫নং মোহাম্মদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বাহালুল কে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ না করে বারবার সংযোগ কেটে দেন।
চাটখিল উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ এহসান উদ্দীনের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে জানান, তিনি একমাস আগে চাটখিলে যোগদান করেছেন। বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে দ্রুত সকল সমস্যা সমাধান করা হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।