ঝালকাঠি সরকারী হরচন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী কর্তৃক কক্ষের বৈদ্যুতিক পাখা, বাতি, বাথরুমের দরজা, কমট, ফ্লাশ বক্স ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। নিঃসন্দেহে তা নিন্দনীয় কাজ। কোন আদর্শবান পরিবারের সন্তান একাজ করতে পারে না। কিন্তু ভাবনা বিষয় হলো "যে দুটি কক্ষে ভাংচুর চালিয়েছে, ওই কক্ষের দায়িত্বরত পরীক্ষক তখন কোথায় ছিলেন?
ঝালকাঠি সরকারী হরচন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী কর্তৃক কক্ষের বৈদ্যুতিক পাখা, বাতি, বাথরুমের দরজা, কমট, ফ্লাশ বক্স ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। নিঃসন্দেহে তা নিন্দনীয় কাজ। কোন আদর্শবান পরিবারের সন্তান একাজ করতে পারে না। কিন্তু ভাবনা বিষয় হলো "যে দুটি কক্ষে ভাংচুর চালিয়েছে, ওই কক্ষের দায়িত্বরত পরীক্ষক তখন কোথায় ছিলেন?
পরীক্ষার সময় শেষ, লেখা শেষ হোক বা নাই হোক কক্ষপরিদর্শকের কাছে উত্তরপত্র জমা দিয়ে পরীক্ষার্থীরা বের হয়ে যায়। উত্তরপত্র জমা নেয়ার পরও যখন পরীক্ষার্থীরা জড়ো হয়েছিলো তখন কক্ষ পরিদর্শকের কি ভূমিকা ছিলো। তিনি কি কেন্দ্র সচিবকে অবহিত করছিলেন? অথবা প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রেই পুলিশ সদস্য নিয়োজিত থাকে তাঁদের কাউকে জানানো হয়েছিলো কিনা? নাকি সংশ্লিষ্ট কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্বে অবহেলায় ভাংচুরের ঘটনা নাকি তাঁদের নেপথ্যে কোন ইন্ধন ছিলো? শুধু তাই না ৬টি বাথরুমের দরজা, কমট ও ফ্লাশ বক্স ভেঙে গুড়িয়ে দিলো তার কোন শব্দ কি কেউ আদৌ টের পাননি। কেন্দ্র সচিব তিনিই বা কেমন দায়িত্ব পালন করলেন?ভাংচুরের সংবাদ শুনে
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের দ্বোতলায় ২০৩ নম্বর কক্ষে ঝালকাঠি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৩২৪৫৯ থেকে ২৩২৪৭৩ পর্যন্ত রোল নম্বরধারী ১৫জন এবং উদ্বোধন বহুমূখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২৩২৬০৫ থেকে ২৩২৬২৯ পর্যন্ত ১৫জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। ওই কক্ষের চারটি বৈদ্যুতিক পাখা, ৩টি টিউব লাইট এবং কক্ষ সংলগ্ন প্রসাধন রুমে ৬টি ওয়াশরুম/বাথরুমের দরজা, ফ্লাশ প্যান, কমট ভাংচুর করে। ২০৫ নম্বর কক্ষে ঝালকাঠি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৩২৪২৮ থেকে ২৩২৪৪৩ পর্যন্ত রোল নম্বরধারী ১৬জন এবং পৌর আদর্শ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২৪২৫১৪ থেকে ২৪২৫২৮ পর্যন্ত ১৫জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। ওই কক্ষের দুটি বৈদ্যুতিক পাখা এবং ২টি টিউব লাইট ভাংচুর করে তারা।
বিদ্যালয়ের কর্মচারী (আয়া) মাকসুদা বেগম জানান, পরীক্ষা শেষ হলে পরীক্ষার্থীরা হৈ হুল্লোর নেমে যায়। পরে রুম পরিস্কার করতে গিয়ে দেখি সব ভাঙাচোরা। তখন স্যারের দায়িত্ব পালন শেষ করে চলে গেছে।ক্ষোভ প্রকাশ করে সাবেক শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা গ্রহণের কাজ শেষ হলে উত্তরপত্র জমা নিয়ে পরীক্ষার্থীরা বের হবার পরে কক্ষ পরিদর্শক বের হবার কথা। তাহলে কক্ষ পরিদর্শক কি স্টুডেন্ট (পরীক্ষার্থী) কক্ষে রেখে উত্তরপত্র নিয়ে বের হয়ে গেছেন? কর্মরতরা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতেন তাহলে সরকারী সম্পদের এতো বড় কোন ক্ষতি হতো না। কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত (ভারপ্রাপ্ত) সচিব মাসুম বিল্লাহকে প্রশাসনকে জানানোর জন্য বললে তিনি তা এড়িয়ে গিয়ে বলেন কাউকে কিছু বলার দরকার নেই। বললে আরো ঝামেলা বাড়বে।
বিদ্যালয় ভাংচুরের খবর পেয়ে সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে তথ্য সংগ্রহকালে সংবাদ পেয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্র সচিব মাওলানা এএসএম মাসুম বিল্লাহ। তার কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি অস্থির আচরণ করে জানান “এবিষয়ে আমি কিছুই বলবো না। যা বলার প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব বলবেন।” বলেই তিনি সাংবাদিকদের সামনে থেকে চলে যেতে প্রস্তুতি নেন। সাংবাদিকরাও পিছু নিলে তিনি একটি রুমে ঢুকে দরজা আটকিয়ে দেন।কেন্দ্র সচিব এবং ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম জানান, আমি ছুটিতে আসছি। ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করছেন মাসুম বিল্লাহ স্যার। তবে ভাংচুরের ঘটনা শুনেছি।বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম জানান, বিষয়টি শুনেছি। গুরুত্বসহকারে দেখছি।