কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
৩ জুলাই বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে মহারশী নদীর খৈলকুড়া বাঁধ ভেঙে ও বাঁধের দু’কোল উপচে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে পাহাড়ী ঢলের পানি প্রবেশ করে মঙ্গলবার ভোরে ঝিনাইগাতী সদর, ধানশাইল ও কাংশা ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ওইসব এলাকার শতাধিক বাড়িঘরের মানুষ।
পানিবন্দি এলাকায় জমিতে পলি জমে সামান্য ক্ষতি হয়েছে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। এছাড়াও মহারশী নদীর বাঁধ উপচে উপজেলা পরিষদের সম্মুখসহ সদর বাজারে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে উপজেলা পরিষদের সম্মুখের প্রধান সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যায়। এছাড়াও দু-একটি অফিসের মেঝেতেও পানি ঢুকে পড়ে। ঝিনাইগাতী বাজারে পাহাড়ি ঢলের পানি ঢুকে মসজিদ রোড (কাঁচাবাজার) ও হাসপাতাল রোডে প্রায় হাঁটু পানি জমে যাওয়ায় জনদুর্ভোগের পরিণত হয়।
অপরদিকে উপজেলার ঝিনাইগাতী সদর, দিঘীরপাড়, রামনগর, চতল, আহাম্মদনগর, বনকালি, ধানশাইল, কুচনীপাড়া, বাগেরভিটা, হাতীবান্ধা, লয়খা, কামারপাড়া, পাগলার মুখ, দাড়িকালিনগরসহ ১৫টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এব্যাপারে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, ‘ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়নের খৈলকুড়া নামক স্থানে মহারশী নদীর বাঁধ ভেঙে পাহাড়ি ঢলের পানিতে নিম্নাঞ্চলের কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সরেজমিনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি।
উপজেলা কৃষি দপ্তরসহ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্টদের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ ও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও তিনি আরো বলেন, ঝিনাইগাতীতে প্রতিবছরই মহারশী নদীর বাঁধ ভেঙে অথবা নদীল দু’কোল উপচে শহর এলাকায় পানি প্রবেশ করায় ব্যবসায়ীসহ উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরের ফাইলপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শহররক্ষার স্বার্থে মহারশী নদীর পাড়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার জানান, পাহাড়ি ঢলে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে রোপা আমন বীজতলার কিছু ক্ষতি হয়েছে। পরিদর্শনের সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনিন্দিতা রানী ভৌমিক, পিআইও মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানগণ উপস্থিত ছিলেন। এ রিপোর্ট লেখা চলাকালীন ঢলের পানি কমতে শুরু করেছে।