দাফনের ৮ মাস পর শহীদ ইমনের লাশ কবর থেকে উত্তোলন

শরীফ হোসাইন প্রকাশিত: ১৯ এপ্রিল , ২০২৫ ১৪:০৮ আপডেট: ১৯ এপ্রিল , ২০২৫ ১৪:০৮ পিএম
দাফনের ৮ মাস পর শহীদ ইমনের লাশ কবর থেকে উত্তোলন
দাফনের ৮ মাস পর ভোলার শহীদ ইমনের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকা উত্তর বাড্ডা এলাকায় গুলিতে নিহত ভোলার ছেলে শহীদ ইমন নামে এক শ্রমিকের মরদেহ দাফনের ৮ মাস পর কবর থেকে উত্তোলন করেছে পুলিশ

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকা উত্তর বাড্ডা এলাকায় গুলিতে নিহত ভোলার ছেলে শহীদ ইমন নামে এক শ্রমিকের মরদেহ দাফনের ৮ মাস পর কবর থেকে উত্তোলন করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পরিবারের সদস্য এবং এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে ভোলা সদর উপজেলাধীন আলীনগর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সাচিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে ইমনের মরদেহটি উত্তোলন করা হয়। পরে মরদেহটির ময়নাতদন্তের জন্য ভোলার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। শহীদ ইমন ওই এলাকার দিনমজুর নান্টু ও পোষাক শ্রমিক কুলসুম বেগম দম্পতির ছেলে।

শহীদের পরিবার জানিয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ২০ জুলাই ঢাকার বাড্ডা এলাকায় রিকশা করে যাত্রী নামিয়ে বাড়ী ফিরছিলেন। তখন ওই এলাকায় সহিংসতায় ঘটনায় গোলাগুলি চলছিল। সেই সময় একটি গুলি ইমনের মুখের নীচে লেগে মাথার খুলি ছিদ্র হয়ে বের হয়ে যায়। এমন অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। পরে ২১ জুলাই ইমনকে তার গ্রামের বাড়ী ভোলা সদর উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের কাজী বাড়ীতে এনে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় ছেলে হত্যার বিচারের দাবিতে শহীদ ইমনের মা কুলসুম বেগম বাদী হয়ে গত ২৬ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালসহ ৯২ জনের নাম উল্লেখ করে ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলা করার পর আদালতের আদেশে ভোলা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আহসান হাফিজের নেতৃত্বে শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে তার গ্রামের বাড়ীর কবরস্থান থেকে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ উত্তোলন করা হয়। এদিকে ইমনের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হবে এমন খবরে এলাকার শত শত নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-যুবক এমনকি শিশুরা পর্যন্ত ওই এলাকায় ভীড় জামায়।

ভোলা সদর উপজেলার সহকারী কমিশন (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আহসান হাফিজ বলেন, আদালতের নির্দেশে শুক্রবার বিকেলে শহীদ ইমনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। মরদেহের সুরতহাল করা হয়েছে, ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে লাশ উত্তোলনের সময় নিহত ইমনের মা কুলসুম বেগমকে আহাজারি করতে দেখা যায়। তার কান্নায় ওই এলাকার আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। কান্না জড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। খুনি শেখ হাসিনা, আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগসহ আমার ছেলে হত্যার সাথে যারা জড়িত তাদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo