এলাকাবাসী ও ধর্ষিতার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে মো. তাহের আলী (৩৫) মোছা. খুশী বেগমকে (৪২) নানাভাবে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলো। মো. তাহের আলীর প্রস্তাবে মোছা. খুশি বেগম সাড়া না দিলে গতকাল রাত ১০টায় ধর্ষিতার বাড়িতে জোড় পূর্বক প্রবেশ করে সে। একপর্যায়ে তাহের আলী ধর্ষিতার শয়নকক্ষের দরজায় ধাক্কা দিয়ে প্রবেশ করে তাকে ধর্ষণ করে। এ সময় ধর্ষিতার আত্মচিৎকারে তাঁর স্বামী সন্তানসহ এলাকাবাসী তাহের আলীকে আপত্তিকার অবস্থায় আটক করে। পরবর্তীতে ঘটনাটি ছড়িয়ে গেলে তা রাতারাতি ৪০ হাজার টাকায় আপোষ মিমাংসা করেন টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম রফিক (৪৫)। আর ওই আপোষ মীমাংসায় একই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস আলী (৪১), স্থানীয় ৭ নং ইউপি সদস্য উমর ফারুক (৪০)সহ প্রভাবশালী মহলের আরো অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
জোরপূর্বক ধর্ষণ করার সময় আপত্তিকর অবস্থায় হাতে নাতে ধর্ষককে আটক করেছে ধর্ষিতার স্বামী ও সন্তান। আর ৪০ হাজার টাকা দিয়ে দফারফা করেছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। বুধবার (১৯) রাত ১০টায় উপজেলার টেপাখড়িবাড়ী ইউপির আজোয়ার পাড়া এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে।
ধর্ষিতা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ী ইউপির আজোয়ার পাড়া এলাকার মো. প্রিন্স মিয়ার (৪৫) ছদ্মনাম স্ত্রী মোছা. খুশী বেগম (৪২)। ধর্ষণের অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি পার্শ্ববর্তী এলাকার মো. জামাল সাধুর ছেলে মো. তাহের আলী (৩৫)।
এলাকাবাসী ও ধর্ষিতার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে মো. তাহের আলী (৩৫) মোছা. খুশী বেগমকে (৪২) নানাভাবে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলো। মো. তাহের আলীর প্রস্তাবে মোছা. খুশি বেগম সাড়া না দিলে গতকাল রাত ১০টায় ধর্ষিতার বাড়িতে জোড় পূর্বক প্রবেশ করে সে। একপর্যায়ে তাহের আলী ধর্ষিতার শয়নকক্ষের দরজায় ধাক্কা দিয়ে প্রবেশ করে তাকে ধর্ষণ করে। এ সময় ধর্ষিতার আত্মচিৎকারে তাঁর স্বামী সন্তানসহ এলাকাবাসী তাহের আলীকে আপত্তিকার অবস্থায় আটক করে। পরবর্তীতে ঘটনাটি ছড়িয়ে গেলে তা রাতারাতি ৪০ হাজার টাকায় আপোষ মিমাংসা করেন টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম রফিক (৪৫)। আর ওই আপোষ মীমাংসায় একই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস আলী (৪১), স্থানীয় ৭ নং ইউপি সদস্য উমর ফারুক (৪০)সহ প্রভাবশালী মহলের আরো অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে ধর্ষণের বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগীর সাথে প্রতিবেদক কথা বলতে গেলে। মীমাংসার মধ্যস্থতাকারী টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম রফিক সমঝোতাস্থাল থেকে উঠে এসে সাংবাদিকদের সাথে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে উদ্ধতপূর্ণ আচরণ করেন। এ সময় তিনি সংক্ষুব্ধ হয়ে আরো বলেন, আপনারা কিসের সাংবাদিক? আপনাদের কে এখানে ডাকছে? আমি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। এটার মীমাংসা আমি করে দেবো। আপনারা পারলে নিউজ করেন। এতে আমার কিছুই যায় আসে না। মনে রাখবেন, আমি টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি! কাউকে পরোয়া করিনা!
পরবর্তীতে এ প্রসঙ্গে স্বেচ্ছায় ভুক্তভোগী মোছা. খুশী বেগম (৪২) বলেন, তাহের আলী দীর্ঘদিন ধরে আমাকে ফোন দিয়ে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে ফুঁসলানোর চেষ্টা করে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলো। একপর্যায়ে গতকাল (১৯ জুন) সন্ধ্যায় তাহের আলী মুঠোফোনে আমাকে কল দিয়ে বিরক্ত করে। আমি শয়নকক্ষে শুয়ে থাকা অবস্থায় আনুমানিক রাত ১০টার দিকে তাহের আলী আচমকা ঘরে প্রবেশ করে আমার মুখ চেপে ধরে জোর জবরদস্তি করে শ্লীলতাহানি করে। আমার আত্মচিৎকারের শব্দ শুনতে পেয়ে পাশের রুমে থাকা স্বামী ও সন্তানসহ এলাকাবাসী ছুটে এসে ধর্ষককে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করে। আমি ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। যাতে আর কেউ ধর্ষণের শিকার না হয়।
এ প্রসঙ্গে ধর্ষিতার স্বামী মো. প্রিন্স মিয়া (৪৫) বলেন, পাশের রুমে ছেলের সঙ্গে গল্প করছি হঠাৎ আমার স্ত্রীর চিৎকার শুনতে পেয়ে তার রুমে প্রবেশের চেষ্টা করি। কিন্তু রুমের দরজায় বন্ধ থাকায় তা আর সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে অন্য আরেকটি রুমের ভিতর দিয়ে প্রবেশ করে দেখি আমার স্ত্রীকে চেপে ধরে তাহের আলী জোর জবরদস্তি করে ধর্ষণ করছে। পরে আমার সন্তানসহ এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ধর্ষককে আটক করি।
বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলতে গেলে আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিকের সাংবাদিকদের সাথে এরকম সংক্ষুব্ধ আচরণে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে কথা বলতে রাজি হননি কেউই।
এ বিষয়ে ডিমলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেবাশীষ কুমার রায় বলেন, আপনাদের মাধ্যমেই বিষয়টি জানলাম। এখন পর্যন্ত কোন পক্ষেই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পাওয়া মাত্রই তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।