ফরিদগঞ্জে দেবর ও ননদের দ্বারা শারীরিক ও মানষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন পারভীন বেগম (২৮) নামে এক গৃহবধু। অব্যাহত নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে স্থানীয়দের দ্বারা বিচার না পেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার মিরপুর গ্রামে।
অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলেও চরম আতঙ্কে দিন কাটছে তার।থানায় লিখিত অভিযোগ ও সরেজমিনে জানা যায়, ওই গ্রামের মৃত তৈয়ব উল্যার বড় ছেলে আরিফ হোসেনের সাথে জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ ভাতখাওয়া গ্রামের শাহজল ক্বারীর মেঝ মেয়ে পারভীনের সাথে প্রেম ও বিবাহের মাধ্যমে দাম্পত্য জীবন শুরু হয়।
এই দাম্পত্য জীবনে তাদের ৩টি সন্তান এসেছে। স্বামীর সংসারে সুখি থাকলেও দেবর জিয়াউর রহমান, ননদ আফরোজা আক্তার রোমা ও সুমা বেগম কর্তৃক শারীরিক ও মানষিক নির্যাতনের শিকার হয়ে হতাশা ও অন্ধকারাচ্ছন্ন জীবন কাটাচ্ছেন পারভীন বেগম। বাবার মৃত্যুর পর পরিবারের কর্তৃত্ব দেখাতে শুরু করেন পারভীনের ননদ আফরোজা আক্তার রোমা।
তিনি নিজের ই”ছামত নানান ঘটনা রচনা করে তু”ছ ওইসব ঘটনায় বেআইনীভাবে গালমন্দ ও মারধর করে পারভীনকে। এভাবেই একাধিকবার দেবর ও ননদ কর্তৃক হামলার শিকার হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা গ্রহণ করেও এই জেলাতে বাবা মা আত্মীয়স্বজন না থাকায় সকল নির্যাতন সহ্য করে আসছে পারভীন। নিজের প্রিয়তমা স্ত্রীর উপর ছোট ভাই ও বোনের দ্বারা এমন অমানবিক নির্যাতন চোখে দেখেও পরিবারের মানসম্মানের কথা বিবেচনায় চুপ থাকতে বাধ্য হয় পারভীনের স্বামী আরিফ হোসেন।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দা শিশু, কিশোর ও বৃদ্ধারা ভুক্তভোগী পারভীনের উপর অমানবিক নির্যাতনের কথা জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পকৃতপক্ষে ওই পরিবারটির মেয়েরা তাদের মায়ের সেবা করার দোহাই দিয়ে বাবার বাড়িতে থেকে তাদের কর্তৃত দেখাতে পারভীনের ওপর এমন অত্যাচার করে আসছে। বিষয়টি সামাজিক ভাবে মেনে নেয়া যায়না, পারভীনের উপর এমন অত্যাচার বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।
পারভীন বেগম হাউমাউ করে কেঁদে এ প্রতিবেদককে বলেন, এ খানে আমার স্বামী ছাড়া আমার পাশে দ্বাড়ানোর জন্য আর কেউ নেই, আমি একাধিকবার শারীরিক ও মানষিক নির্যাতনের শিকার হয়েও বিচার পাইনি। নিরুপায় হয়ে থানায় অভিযোগ করেছি, সঠিক বিচার কামনার্থে ছেলে- মেয়েদের নিয়ে শান্তিতে থাকতে চাই।ভুক্তভোগীর স্বামী আরিফ হোসেন বলেন, আমি পরিবারের বড় ছেলে,তাই ছোট ভাই ও বোনদের নির্যাতন সহ্য করা ছাড়া কোন উপায় দেখছিনা।
তাদের বাধা দিতে গিয়ে আমিও হামলার শিকার হয়েছি। তার ভাই ও বোনকর্তৃক স্ত্রীর উপর নির্যাতনের কথা শিকার করেছেন।এদিকে অভিযুক্ত অভিযুক্ত আফরোজা আক্তার রোমা ঘটনা অস্বীকার করে নিজেদের নির্দোষ দাবী করেন।এই ঘটনায় পূর্বে সালিশ করেছেন এমন এক বৃদ্ধা মোস্তফা বলেন,আমরা ইতি পূর্বে অনেকবার সালিশ দরবার করলেও পুনরায় নির্যাতনের শিকার হতে হয় ওই গৃহবধুকে।
প্রকৃতপক্ষে একটি চক্রের ইন্ধনে অভিযুক্তরা এমন অপরাধ করে পার পেয়ে যায়। স্থানীয়উন্সিলর জাহিদর হোসেন বাবুল পাটওয়ারী বলেন, এই পরিবারটির একাধিবার শালিস দরবার হয়েছে। পারভীন বেগম নামে ওই গৃহবধু নির্যাতনের শিকার এটা প্রমানিত। তার স্বামী আরিফ হোসেন সহজ স্বরল হওয়ায় ভুক্তভোগী উচিৎ বিচার বঞ্চিত হচ্ছে বলে আমি মনে করছি।ফরিদগঞ্জ থানার সহকারি উপপুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) আবদুল কাদির বলেন, পারভীন বেগমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনা¯’ল পরিদর্শন করা হয়েছে। তদন্ত অব্যাহত আছে, পরবর্তি আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।