ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার মধুখালী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩ জন সহকারী শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান, মুহম্মদ আশেকুল আমিন ও রণজয় কুমার মিত্র এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও অসদাচরণের জন্য ফরিদপুরের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মহিউদ্দিন স্বাক্ষরিত তার দপ্তরের স্মারক নম্বর ১১৬১,১১৬২ ও ১১৬৩ মোতাবেক বিভাগীয় মামলা দায়ের করেন এবং প্রধান শিক্ষক অলোকা বিশ্বাসকে ১১৬৪ নম্বর স্মারক অনুযায়ী কারন দর্শানো নোটিশ প্রদান করেন।
বুধবার ( ২ই অক্টোবর) বিভাগীয় মামলার এ আদেশ ও কারন দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়।বিভাগীয় মামলার আদেশ সুত্রে জানা যায়, সহকারী শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান, মুহম্মদ আশেকুল আমিন ও রণজয় কুমার মিত্রের বিরুদ্ধে পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নে অনিয়ম - দুর্নীতি,শ্রেণি কক্ষে পাঠদানে ফাঁকি দিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ানো, প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং পরীক্ষার হলে প্রাইভেট পড়ানো, শিক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্রের উত্তর বলে দেওয়া,পাঠদানে লেসন নোট ও উপকরণ ব্যবহার না করা ও সেকশন অনুযায়ী ক্লাস না নেওয়া, শ্রেণি পাঠদানে পূর্ণ সময় না দেওয়া, মাল্টিমিডিয়ায় ক্লাস না নেওয়া এবং শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং সৃষ্টি করে নেতৃত্ব দেওয়া ও বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাঁধা সৃষ্টি করার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
তাদের এরূপ কার্যক্রম বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশুদের লেখা-পড়া মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত করেছে ও প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে। এ ধরনের কার্যক্রম কর্তব্যে কর্মে অবহেলা এবং সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপীল) বিধিমালা-২০১৮ এর ৩(খ) ও ৩(ঘ) বিধি মোতাবেক অসদাচরণ ও দুর্নীতির দায়ে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হওয়ায় তাদের এরূপ কার্যক্রমের জন্য সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮ এর ৩(খ) ও ৩(ঘ) বিধি মোতাবেক অসদাচরণ ও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে। বর্ণিত বিধিমালা অনুযায়ী কেন তাদেরকে যথাযুক্ত শাস্তি প্রদান করা হবে না তার সন্তোষজনক জবাব আগামী ১০(দশ) কর্মদিবসের মধ্যে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে দাখিল করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনেক অভিভাবক অভিযুক্ত তিন জন সহকারী শিক্ষকের অনতিবিলম্বে জেলার বাইরে বদলি দাবি করেন।জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মহিউদ্দিন জানান, প্রধান শিক্ষক অলোকা বিশ্বাসের অদক্ষতা ও অযোগ্যতার জন্য তাকে কারন দর্শানো নোটিশ দিয়েছেন। উক্ত নোটিশ অনুযায়ী তাকে ৩ কর্মদিবসের মধ্যে জবাব দাখিল করার নির্দেশ ও দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত তিন জন সহকারী শিক্ষক প্রতিযোগিতা করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়িয়ে থাকেন। প্রাইভেট শিক্ষার্থীদেরকে পরীক্ষায় প্রাপ্য নম্বরের চেয়ে অধিক নম্বর প্রদান করে থাকেন যা অভিভাবকদের মধ্যে হতাশার জন্ম দিয়েছে। কোন অভিভাবক উক্ত তিনজন শিক্ষক স্থানীয় হওয়ায় সন্তানদের কথা ভেবে কোন টু শব্দ করার সাহস পান না। শিক্ষক হাবিবুর রহমানর বিরুদ্ধে শ্রেণি পাঠদানের সময় বিভিন্ন খেলাধুলার ধারাভাষ্য দিয়ে বেড়ানোর অভিযোগ রয়েছে।