দাগনভূঞায় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করেছে নিজ ভাসুর। এঘটনায় আহত রোকসানা আক্তারকে মুমূর্ষু অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) সকালে উপজেলার ৫ নং ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামের জিন্নাত আলী ব্যাপারী বাড়িতে এঘটনা ঘটে। আহত রোকসানা আক্তারের স্বামী আবু ছায়েদ মুঠোফোনে সাংবাদিককে জানান, দীর্ঘদিন ধরে তাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। সম্পত্তি বিরোধ মিমাংসায় বেশ কয়েকবার স্থানীয় ভাবে বৈঠকও হয়েছে। পরে এলাকার বিচারকদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সম্পত্তি বিরোধ মিমাংসা হওয়া পর্যন্ত দুই ভাইয়ের সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয় করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু এলাকার সিদ্ধান্তকে তোয়াক্কা না করে বৃহস্পতিবার সকালে তার বড় ভাই আবুল হোসেন কাউকে কিছু না বলে বাড়ির পাশে থাকা গাছ কেটে পেলে। পরে খবর পেয়ে ছোট ভাই আবু ছায়েদ তার বড় ভাইকে গাছ কাটার কথা জিজ্ঞেস করতে গেলে তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে মারতে আসে। এঘটনার পর আবু ছায়েদ গ্রামের প্রধান ইয়াছিন মোল্লার কাছে ছুটে গিয়ে বিষয়টি অবগত করেন। পরে তিনিও আবুল হোসেনকে গাছ কাটতে নিষেধ করেন। পরে তাদের উপরও আবুল হোসেন ক্ষিপ্ত মনোভাব দেখান। এক পর্যায় ঘটনাস্থলে আবু ছায়েদের স্ত্রী রোকসানা আক্তারও গিয়ে তার ভাসুরকে গাছ কাটতে নিষেধ করেন। তার জের ধরে আবুল হোসেন তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী রোকসানা আক্তারকে হাতে থাকা দা (ছেনি) দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে। এতে করে রোকসানা আক্তারের শরীরের হাত, মাথা, পিঠ, কোমর এবং হাটুতে মারাত্মকভাবে জখম হয়। পরে গাছ কাটতে যাওয়া ব্যক্তিরা এগিয়ে আসলে ঘাতক আবুল হোসেন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে স্বামী আবু ছায়েদ ছুটে এসে গুরুতর আহত স্ত্রী রোকসানা আক্তারকে প্রথমে ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়েছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে আবু ছায়েদ জানান, আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে গতকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছিলাম। আজ শনিবার (১৬ মার্চ) আমি তিন জনের নামে অভিযোগ করি। মামলার অভিযুক্তরা হলেন মোঃ আবুল হোসেন (৫২), জান্নাতুল আরজু (২৪) এবং তাহমিনা আক্তার সুখী (২২)।
একই বাড়ির বাসিন্দা এ্যাডভোকেট মুয়াজ্জিম নিশান জানান, আবুল হোসেন এবং আবু ছায়েদ জিন্নাত আলী ব্যাপারী বাড়ির শেখ আহম্মদ মিয়ার ছেলে। তাদের দীর্ঘদিন সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এঘটনায় একটি মামলাও চলমান রয়েছে। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ যেহেতু একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছে আবুল হোসেনের উচিত ছিল তা মেনে চলা। কিন্ত তিনি তা না করে উল্টো আইন ভঙ্গ করেছেন এমনকি মহিলার গায়ে হাত তুলে তিনি আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন। এখন আবুল হোসেন আইনের চোখেও অপরাধী।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে দাগনভূঞা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসিম বলেন, উপজেলার ৫নং ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামে মারামারি একটি সংবাদ পেয়েছি। পরে আমাদের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আজ ঐ ঘটনার একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।