মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের মুক্তারপুর বাজার থেকে বিনোদপুরের রাস্তাটি দুই বছরেও মেরামতের কাজ শেষ হচ্ছে না। এর ফলে এ রাস্তায় চলাচলে সাধারণ মানুষ চরমভাবে ভোগান্তি পোহাচ্ছে। এতে জনদুর্ভোগ বেড়েছে।
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের মুক্তারপুর বাজার থেকে বিনোদপুরের রাস্তাটি দুই বছরেও মেরামতের কাজ শেষ হচ্ছে না। এর ফলে এ রাস্তায় চলাচলে সাধারণ মানুষ চরমভাবে ভোগান্তি পোহাচ্ছে। এতে জনদুর্ভোগ বেড়েছে।
ধলেশ্বরী নদীর তীর ঘেষে এ রাস্তাটির অবস্থান। এ রাস্তার একাংশের ওপরে রয়েছে মুক্তারপুর সেতু। ইতোমধ্যে রাস্তাটি মেরামতের মধ্যেই দুই দফা বন্যা ও বর্ষায় আক্রমণের শিকার হয়েছে। এর ফলে মেরামতের আগের রাস্তা ও শহর রক্ষা বাঁধ বেশির ভাগ নদীতে বিলিন হয়েছে। তাতে প্রকৃত রাস্তাটি বেশি পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটি হয়েছে মুলত মেরামতের কাজে ধীরগতির কারণে। যথা সময়ে রাস্তাটি নির্মিত হলে এমনটি হতো না।
বর্ষাকালে নদীর কিনারা দিয়ে মুক্তারপুর থেকে বিনোদপুরের স্টিমারঘাট পর্যন্ত ডিঙ্গি নৌকা দিয়ে লোকজন পারাপার হতো। আর শুস্ক মৌসুমে পায়ে হেটে নদীর পার ধরে চলাচল করতো।
৯০’এর দশকে এলজিআরডির উপ মন্ত্রী আব্দুল হাই ধলেশ্বরী নদীর তীরে শহর রক্ষা বাঁধ দিয়ে মুক্তারপুর থেকে বিনোদপুর পর্যন্ত এ রাস্তাটি নির্মাণ করেন। এরপর এ রাস্তাকে কেন্দ্র করে এখানকার মুক্তারপুরে আলু রাখার জন্য একাধিক হিমাগার গড়ে ওঠে। মালিপাথর থেকে ফিরিঙ্গিবাজার পর্যন্ত ইট বালু ও চাউলের অটো রাইস মিল গড়ে উঠে। এ পথের ফিরিঙ্গিবাজার থেকে বিনোদপুরের স্টিমারঘাট পর্যন্ত রয়েছে শতাধিক চাউলের আড়ৎ। এখানকার ব্যবসায়িদের মালামাল পরিবহনের জন্য ট্রাক চলাচল করে। এর ফলে এ রাস্তাটি দীর্ঘ বছরে এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় যে তাতে চলাচলে যাতায়াত কারীদের দুর্ভোগ বেড়ে যায়। এর পরেই সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ এ রাস্তাটি মেরামতের উদ্যোগ নেন।
আবিদ মনসুর নামের ঠিকাদার মেরামতের এ কাজটি পান ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে এখানে কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। আর ৯ মাসের মধ্যে এ মেরামতের কাজটি শেষ করার কথা। কিন্তু আদৌ এ রাস্তার কাজ শেষ হচ্ছে না। নির্ধারিত সিডিউলের ৬ মাস পরে এখানে কাজ শুরু হয় ধীরগতিতে। এর ফলে কাজের মাঝেই শেষ সময়ের কোরবানী ঈদের মধ্যে ধলেশ্বরী নদীতে হুহু করে পানি বৃদ্ধি পেলে পূর্বের রাস্তাটি ঠিকাদারের গাফলতির কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এভাবে পরের বছর অনুরূপভাবে আবারো রাস্তাটি ক্ষতির মুখে পরে। এবারো এ রাস্তাটি বর্ষা কিংবা বন্যায় তৃতীয় দফায় রাস্তাটি ক্ষতির মুখে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ রাস্তাটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি টাকা। দুই ধাপে এ রাস্তাটির মেরামতের কাজ করা হবে। এমনটি জানা গেছে সদরের এলজিইডি অফিস সূত্রে।
মুক্তারপুর বাজার থেকে কদম রসুল হিমাগার পর্যন্ত প্রথম ধাপে ১৩ মিটার রাস্তা আরসিসিতে নির্মিত হবে। এটি ইতোমধ্যে নির্মিত হয়েছে। এলাইড হিমাগার থেকে বিনোদপুর পর্যন্ত পরের দ্বিতীয় ধাপে নির্মিত হবে ১২৩৪ মিটার পিচের রাস্তা। এ রাস্তার ৪ভাগের মধ্যে তিনভাগ ইটের খোয়ার কাজ হয়েছে। কিন্তু একভাগের কাজ এখনো শুরু হয়নি। মুক্তারপুর বাজার থেকে উত্তর দক্ষিণের কিছু দূরে শহর রক্ষা বাঁধে পুরনো ব্লক এলোমেলো ভাবে রয়েছে। আগত বর্ষার নদীর পানি সুযোগ বুঝে ভিতরে প্রবেশ করতে পারলে নির্মিত রাস্তার বড় ধরণের ক্ষতির আশংকা রয়েছে। অনুরূপ মালিপাথর গ্রামের দিকে কয়েকটি পয়েন্টে শহর রক্ষা বাঁধের কাজ এখনো শেষ করা হয়নি। তাতে এখানেও ক্ষতির আশংকা রয়েছে।মালিপাথর এলাকার স্হানীয় এক বাসিন্দা এই প্রতিবেদককে বলেন, এ রাস্তাটি কয়েক বছর ধরে মেরামত ছাড়া পরে রয়েছে। তাতে মানুষের বড় কষ্ট হচ্ছে। রাস্তার ধুলা এখন বসত ঘরে ডুকছে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নজর দেয়া প্রয়োজন। মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল আহসান বলেন, বর্তমানে রাস্তটির ৫০ শতাংশ কাজ হয়েছে। এ কাজটি শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে বারবার তাগাদা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু ফল তেমনটা পাওয়া যাচ্ছে না।