যশোর শহরের বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেছে শিক্ষার্থীরা। সোমবার সকাল থেকে এ কর্মসূচি শুরু করেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের যশোর জেলা শাখার নেতৃবৃন্দদের সাথে মতবিনিময়, প্রতিমা প্রস্তুতি কার্যক্রম পরিদর্শন এবং বিভিন্ন পূজা মন্ডপে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করেন।
পূজা মন্ডপ পরিদর্শনকালে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ ও শিক্ষার্থীরা জানান, বিভিন্ন পূজা মন্ডপে নিরাপত্তার কিছু ঘাটতি রয়েছে। পূজা মন্ডপগুলোতে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরারও ঘাটতি রয়েছে বলে জানান তারা। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের অন্যতম প্রতিনিধি জেসীনা মুর্শীদ প্রাপ্তির নেতৃত্বে শিক্ষার্থীদের কয়েকটি দল পৃথকভাবে এ পূজা মন্ডপগুলো পরিদর্শনে বের হয়।এ সময় তারা যশোর শহরের বেজপাড়া পূজা মন্ডপ, বয়েস ক্লাব পূজা মন্ডপ, নিউবেজপাড়া, বৈঠকখানা বেজপাড়া, সুধীর বাবুর কাঠগোলা, চাঁচড়া সুন্দরী মন্দির, চাঁচড়া শিব মন্দির প্রায় দশ থেকে বারোটি পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেন।
শিক্ষার্থীদের সাথে পূজা মন্ডপ পরিদর্শনকালে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ যশোর জেলা শাখার সভাপতি দীপংকর দাস রতন বলেন, 'এবার পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কিছুটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমরা পুলিশ প্রশাসনের সাথে বৈঠক করেছি তাদের আন্তরিকতার কোন ঘাটতি নেই। তবে আমাদের কিছু নিরাপত্তা জনিত সংকট রয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, আমরাও পূজা মন্ডপগুলোতে হিন্দু মুসলমান মিলিয়ে একটা নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে প্রশাসনকে একটি ফরম্যাট দিয়েছি।
'তিনি আরও বলেন, 'আমাদের অনেক পূজা মন্ডপে সিসিটিভি ক্যামেরার ব্যবস্থা নেই। আমরা চেষ্টা করছি প্রত্যেকটা মন্দির মন্ডপকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আনার জন্য। একইসাথে যারা সচেতন ব্যাক্তিবর্গ আছেন তাদের নিকটও আমাদের অনুরোধ থাকবে যেন তারা আমাদের সিসিটিভি ক্যামেরা বিষয়টি নজরে নিয়ে স্বউদ্যোগে ব্যবস্থা করে দেন। শারদীয় দুর্গাপূজার পূজার অংশটা হিন্দুদের, কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি এই উৎসবটি হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবার। আমরা বাঙালীরা সমানভাবে উৎসাহ নিয়ে সাড়ম্বরে এ উৎসব পালন করব। এ বছর যশোর জেলায় ৮টি উপজেলায় মোট ৬৫৬টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের অন্যতম প্রতিনিধি জেসিনা মুর্শীদ প্রাপ্তি বলেন, 'সামনে শারদীয় দুর্গাপূজা। হিন্দু ধর্মের ভাই-বোনেরা সকলে এখন এ উৎসবকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিশেষ করে বিভিন্ন পূজা মন্ডপে প্রতিমা ইতিমধ্যে তৈরী হয়ে গেছে, এখন রং-তুলির কাজ চলছে। আমরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রের প্রতিনিধিদের অবগত করে পূজা মন্ডপ পরিদর্শনে বেরিয়েছি। পূজা মন্ডপগুলো ঘুরে ঘুরে দেখছি, কোন নিরাপত্তা জনিত ঘাটতি আছে কিনা, বা কোনটাতে কোনটাতে সিসি ক্যামেরা নেই সেগুলো তালিকা করছি। নিরাপত্তার ঘাটতি রয়েছে যেসকল পূজা মন্ডপে সেগুলোর তালিকা প্র¯‘ত করে আমরা প্রশাসনের নিকট হস্তান্তর করব।'
তিনি আরও বলেন, 'বেজপাড়া সর্বজনীন পূজা মন্দির যশোরের কেন্দ্রীয় মন্দির বলে পরিচিত। এখানে চারটি সিসি ক্যামেরা আছে তার মধ্যে ২ টি নষ্ট। এছাড়া বয়েজ ক্লাব পূজা মন্ডপে সিসি ক্যামেরা নেই। কয়েকটা পূজা মন্ডপে একেবারে ভেতরে সিসি ক্যামেরা থাকলেও বাহিরে বা গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামেরা নেই। সব মিলিয়ে আমরা সিসি ক্যামেরা ঘাটতি লক্ষ্য করতে পারছি।'পূজা মন্ডপ পরিদর্শনকালে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন, শাদমান সাকিব রাদ ,শিহাব সারার দীপ্র, রফিকুল ইসলাম রোছি, আমির হামজা, আহম্মদ কবির পিয়াস সাফওয়ান, আবরার জাওয়াদ, আহনাফ, আজওয়াদ জর্জিস, জুবায়ের বিন ফারুকসহ আরও অনেকে।শিক্ষার্থীদের সাথে পূজা মন্ডপ পরিদর্শনকালে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ যশোর জেলা শাখা ও বেজপাড়া পূজা মন্ডপের সভাপতি অচিন কুমার ধর, সুশীল বিশ্বাসসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।