চট্টগ্রাম-৩ সন্দ্বীপে স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল মার্কা) ড. জামাল উদ্দিন চৌধুরীর মিছিলে আবার হামলা চালিয়েছে নৌকা সমর্থিতরা। এ ঘটনায় সন্দ্বীপ থানার এক এসআইকে প্রত্যাহার ও ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শনিবার রাতে দ্বীপের সন্তোষপুর ইউনিয়নে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফুলমিয়া ও তার ছেলে মুন্না (৩০) আহত হন। আহতদের মুমূর্ষু অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে, সন্দীপ থানা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর জাহিদের নেতৃত্বে নৌকা সমর্থিত একদল সন্ত্রাসী এ হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় সন্দ্বীপ থানা থেকে ওই এসআইকে প্রত্যাহার এবং ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আহতরা জানান, শনিবার বিকালে সন্তোষপুর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল মার্কার জনসমাবেশ ছিল। সমাবেশ চলাকালে নৌকা সমর্থিত ৫০-৬০ জনের সন্ত্রাসী সশস্ত্র অবস্থায় ওই সমাবেশ এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিল। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষ থেকে বিষয়টি ওই এলাকার দায়িত্বে নিয়োজিত এসআই জাহিদকে জানানো হয়। কিন্তু পুলিশের ওই কর্মকর্তা উল্টো স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের ধমক দেন।
এসআই জাহিদ বলেন, নৌকা সমর্থিত নেতাকর্মীরা এখানে থাকবেন।
আহত সন্তোষপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফুল মিয়া যুগান্তরকে বলেন, সমাবেশ শেষ হওয়ার পর তারা যখন বাসায় ফিরছিলেন তখনই অতর্কিতে সন্ত্রাসীরা তার ওপর হামলা চালায়। এ সময় আমার ছেলে মুন্না আমাকে বাঁচাতে আসলে তারা মুন্নার উপরও হামলা চালায়।
আহত মুন্না বলেন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাফর ইসলামের ছেলে মিঠুন ও বাবলুর নেতৃত্বে ২৫-৩০ জনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী ‘নৌকা’ স্লোগান দিয়ে তাদের উপর হামলা চালিয়েছে। এ সময় তারা চার-পাঁচ রাউন্ড গুলিও ছুড়েছে। তারা হকিস্টিক ও রাম দা দিয়ে তার মাথায় কোপ দিয়েছে। এ সময় তারা হুমকি দেয়।
মুন্না বলেন, এ সময় নৌকার সমর্থিত সন্ত্রাসীরা বলেছে- ৭ তারিখ কেন্দ্রে গেলে তাদের লাশ বঙ্গোপসাগরে ভাসবে।
এদিকে এ হামলার ঘটনায় সন্দ্বীপের প্রত্যেকটি ইউনিয়নে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এসে রাতভর সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবিতে স্লোগান দেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ ঘটনায় সন্দ্বীপ থানায় মামলা হয়েছে।
হামলার ঘটনায় সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের অভিযান চলছে বলে সন্দ্বীপ থানা পুলিশ জানিয়েছে।
এর আগে স্থানীয় সারিকাইত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পনিরের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর মিছিলে হামলা চালিয়েছিল।
এছাড়া মুসাপুর ইউনিয়নের আলী মিয়ার বাজার ও এনাম নাহার মোড়েও নৌকার সমর্থিতরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর মিছিলে হামলা চালায়। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এ কারণে সন্দীপজুড়ে ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে, তবে এসআই জাহিদ প্রত্যাহার হওয়ায় অনেকটা স্বস্তি ফিরেছে।