বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার সুন্দর মাহমুদ ইসলামীয়া একাডেমীর প্রধান শিক্ষক তহমিনা বেগমকে দুই দফায় কারন দর্শানোর নোটিশ (শোকোজ) করা হলেও জমি উদ্ধার করতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দিয়ে আন্দোলন করানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব শিক্ষার্থীরা সোমবার দুপুর ১ টায় সান্তাহার রেলগেট এলাকায় মানববন্ধন এবং পরে দ্রæতযান এক্সপ্রেস আন্ত:নগর ট্রেন অবরোধ করেন।
জানা যায়, উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের নতুন বাজার এলাকায় সুন্দর মাহমুদ ইসলামীয়া একাডেমী উ”চ বিদ্যালয়ের মূল ফটকের পশ্চিম পাশের জায়গা স্কুলের দাবী করা হয় । কিন্ত ইতিপূর্বে ওই জায়গা নিয়ে মামলার পর আদালতের রায় মূলে জনৈক আকবর আলী ভোগদখল করে আসছিলেন। তিনি গত ১১ সেপ্টেম্বর ওই জায়গায় থাকা একটি আম গাছ কাটেন। এরপর প্রধান শিক্ষক তহমিনা বেগম ওই জায়গা বিদ্যালয়ের দাবী করে থানা এবং ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমানা আফরোজ বিষয়টি সমাধানের জন্য কমিটির সদস্য, শিক্ষক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে জরুরী মিটিং করেন। সেই মিটিংয়ে উল্লেখিত জায়গা মাপজোখের সীদ্ধান্ত হয়। কিš‘ প্রধান শিক্ষক সেই সীদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন করতে উৎসাহিত করেন। এরপর ক্লাসে না গিয়ে শিক্ষার্থীরা র্যালী, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেন। মূলত একারনেই প্রধান শিক্ষক তহমিনা বেগমকে পরপর দুই দফায় কারন দর্শানো নোটিশ (শোকোজ) করা হয়। কিন্ত‘ প্রধান শিক্ষক নোটিশের কোনো জবাব না দিয়েই সোমবার দুপুরে ফের মানববন্ধন ও ট্রেন অবরোধ করতে শিক্ষার্থীদের উৎসাহীত করেন। ট্রেন অবরোধের খবর পেয়ে রেল পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনির সদস্যরা ঘটনা¯’লে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
এ বিষয়ে আকবর আলী বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক তহমিনার মা জাহানারা বেগমের কাছে থেকে ১৯৯৬ সালে ওই জায়গাটি কিনে নেই। সেই থেকে জায়গাটি আমার দখলেই আছে। তহমিনা প্রধান শিক্ষক হওয়ার পর ২০১৪ সালে জায়গাটি স্কুলের দাবী করে সন্ত্রাসী কায়দায় দখলের চেষ্টা করেন। বাঁধা দিতে গেলে তারা আমার স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও আমাকে মারপিট করে আহত করেন। এই জায়গা নিয়ে মামলা করি এবং ২০১৮ সালে নওগাঁ আদালত আমার পক্ষে চিরস্থায়ী রায় দেন। তহমিনা বেগম নতুন করে জায়গা দখলে নিতে শিক্ষার্থীদের দিয়ে আন্দোলন করাচ্ছেন। সেই সাথে গত কয়েকদিন ধরে আমার বাড়িতে ঢিল ছুড়ে মারা এবং অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করাও হয়েছ।’
জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তহমিনা বেগম শোকোজ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে আর আমাকে ভিকটিম বানানো হয়েছ।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমানা আফরোজ বলেন, প্রথমে স্থানীয় ভাবে জায়গাটির সমস্যা নিরসনের চেষ্টা করা হয়েছিলো। সমাধান না হওয়ায় পরে প্রধান শিক্ষককে আইনী পক্রিয়ায় (আদালতে যাওয়ার) পরামর্শ দেওয়া হয়। কিš‘ তিনি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ক্লাস বন্ধ রেখে আন্দোলন করতে উৎসাহীত করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। যা একজন প্রধান শিক্ষক হিসেবে মোটেও ঠিক করেননি।