ক্লাস ছুটির পর সবাই বাড়ি গেলেও বিদ্যালয়ের বাথরুমে প্রথম শ্রেণির এক ছাত্র আটকা পড়ায় সে বাড়ি ফিরতে পারেনি। ওই শিশু দীর্ঘ ৬ ঘণ্টা বাথরুমের দরজা ধাক্কাধাক্কি করার পরে অবশেষে রুদ্ধশ্বাস অবস্থায় সন্ধ্যা ৬টার দিকে বের হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের ৯নং পাঁচখোলা বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।এলাকাবাসী ও ছাত্রের পরিবার সূত্রে জানা যায়,পাঁচখোলা এলাকার মৃত্যু নুরুল হকের ছেলে রাফিন ৯নং পাঁচখোলা বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির একজন ছাত্র। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) প্রতিদিনের ন্যায় স্কুলে গিয়েছিলেন রাফিন। তখন তাদের বিদ্যালয় পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা শেষ করে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিদ্যালয় ছুটির পর সে টয়লেটে যায়।পরে দপ্তরি খোকন খান টয়লেট চেক না করেই বাহির থেকে রশি দিয়ে আটকিয়ে দিয়ে চলে যান।পরে শিশুটি দরজাটি খোলার জন্য ডাক চিকিৎসার করলেও তখন কোনো সাড়া মেলেনি। এ সময় বারবার দরজা খোলার জন্য চিৎকার করায় শিশুটির গলা ও মুখ রক্তাক্ত হয়ে যায়। পরে প্রায় ছয় ঘণ্টা পর শিশুটি দরজা ধাক্কাধাক্কি করলে একপর্যায় টয়লেটের দরজাটি খুলতে সক্ষম হয়েছে।
এদিকে ছুটির পর শিশুটি শিশু নিবাসে না ফেরার কারণে শিশু নিবাসের কর্মকর্তারা বিভিন্ন ছাত্র ও আত্মীয়ের বাড়িতে খুঁজতে থাকেন। এদিকে সন্ধ্যা ৬টার পর বিদ্যালয়ের তিনতলা থেকে একটি মুদি দোকানদারকে বিদ্যালয়ের কেচি গেট খোলার কথা বলে পরে অসুস্থ হয়ে পড়লে কয়েকজন মিলে শিশুটিকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে শিশুনির্বাসে নিয়ে যায়।
এলাকাবাসী এ ঘটনাকে ১৯৮০ সালের শিশুতোষ চলচ্চিত্র ছুটির ঘণ্টার সঙ্গে তুলনা করে বলেন, সেখানে ৬ ঘণ্টা পর স্কুলের বাথরুম থেকে জীবিত উদ্ধার হলো ছাত্রটিকে। আর কিছু সময় হলেই ছুটির ঘণ্টা বেজে যেত শিশুটির।শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে ওই ছাত্রের নিবাসে গেলে সে তার ভাষায় গতকালের ঘটনা বোঝানোর চেষ্টা করলেও শিশু নিবাসের পরিচালক বাতেন খান শিশুটির সাথে কথা বলতে বাধা প্রধান করেন। তবে কারণে শিশুটির বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
দোকানদার বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বাথরুমের আটকা পড়ে রয়েছে। কোনো মতেই দরজা খুলে তিন তালার বেলকনি থেকে আমাদের ডাক দেয় পরে আমরা তাকে গিয়ে উদ্ধার করি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রওশন আরা বেগম বলেন, ঐদিন আমি একটা মিটিংয়ে ছিলাম। বের হওয়ার আগ পর্যন্ত এমন কিছু তার নজরে পড়েনি। আমি পরে জানতে পেরেছি। বিষয়টির সাথে কে জড়িত রয়েছে তদন্ত করা হবে।মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল মামুন বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি যদি এরকম কিছু হয়ে থাকে তদন্ত সাপে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।