প্রায় আটাশ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই সংস্কার কাজে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। এরপর থেকে উক্ত সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে
সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের কলারাইবাজার থেকে হলিমপুর-মোবারকপুর রাস্তাটি দীর্ঘদিনেও সংস্কার হয়নি। ফলে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দুই ইউনিয়নের অর্ধলক্ষাধিক মানুষের। উপজেলা এলজিইডি বিভাগ ও স্থানীয় সংসদ সদস্য একাধিকবার সংস্কারের আশ্বাস দিলেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কলারাই(১৯) মাইল বাজার থেকে হলিমপুর ২ কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তাটি সর্বশেষ ২০১৭ সালে সংস্কার করা হয়। প্রায় আটাশ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই সংস্কার কাজে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। এরপর থেকে উক্ত সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। এদিকে গতবছর পর পর দুটি বন্যায় সড়কটির কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত আর খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এছাড়া সামান্য বৃষ্টি হলে রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে পানিতে তলিয়ে যায়। এবং বাজারে কোনো ড্রেন না থাকায় রাস্তায় কাদা ও জলাবদ্ধতা তৈরী হয়। যানবাহন ছাত্রছাত্রী, ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কলারাই বাজার,মুতিয়ারগাও, ভাগলপুর, কলারাই, পূর্ব মোবারকপুর, মনতৈল, পশ্চিম মোবারাকপুর, নুরপুর, জহিরপুর, দক্ষিণ মোবারকপুর, গাভুরটেকি, হলিমপুরসহ গোয়ালাবাজার ও সাদিপুর ইউনিয়নের প্রায় ১৫-২০ টি গ্রামের বাসিন্দাদের। এই রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, কৃষক, ব্যবসায়ীসহ উপজেলার অর্ধলক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করে।
গোয়ালা বাজার আদর্শ সরকারী মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী মুন্নি আক্তার বলেন, আমার বাড়ি মোবারাকপুর গ্রামে কলারাই (১৯) মাইল বাজার হয়ে যেতে হয় কলেজে। রাস্তা ভাঙ্গার কারনে রিক্সায় যেতে অনেক কষ্ট হয়। ৫ মিনিটের রাস্তা ২০ মিনিট লাগে। অনেক দিন দেরি হয়ে যায় কলেজে গিয়ে ক্লাস পাই না। রাস্তাটি অতি দ্রুত সংস্কারের দাবী জানাই।
ইজিবাইকচালক আবুল কালাম বলেন, রাস্তায় অনেক খানাখন্দ থাকায় প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। মহাসড়কে আমরা উটতে পারি না পুলিশের জন্য আমাদের এই রাস্তায় রিক্সা চালিয়ে পরিবার চালাতে হয়। রাস্তা ভাঙ্গার জন্য ১০ মিনেটে পথ যেতে ৩০-৩৫ মিনিট লেগে যায়। এ রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে অসুস্থ রোগীদের অবস্থা নাজুক এবং সুস্থ সবল মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এতে মানুষ আমাদের গালীগালাজও করে।
সিলেট জেলা মৎসজীবি লীগের সহ-সভাপতি ও কলারাই বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আরশ আলী জানান, দীর্ঘদিন থেকে উপজেলা এলজিইডি ও এমপি মহোদয়ও আমাদের আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন আমাদের এই রাস্তা হবে হবে,কিন্তু আজ পর্যন্ত আমাদের রাস্তার কোনো কাজ হয়নি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ভ্যান, ইঞ্জিনচালিত যানবাহন চলাচল করছে। স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসাসহ শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণীর প্রায় ৫০ হাজার মানুষ এ ভাঙা রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করেন। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের দাবী জানাই প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) প্রকৌশলী মো: আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এই রাস্তার জন্য প্রকল্প তৈরি করে উর্ধ্বতন মহলে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু প্রয়োজনীয় বরাদ্ধ পাওয়া যায়নি। তবে চলতি বছর এই সড়ক সংস্কারের কথা রয়েছে।