এক সময় গ্রামীণ জনপদের অবস্থাসম্পন্ন অধিকাংশ গৃহস্থের বাড়িতেই ছিল কাচারিঘর। আর এই কাচারিঘর ছিল গ্রাম-বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতির একটি অংশ। কালের বিবর্তনে আজ কাচারিঘর বাঙালির সংস্কৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। গেস্টরুম কিংবা ড্রয়িং রুমের আদি ভার্সন কাচারিঘর এখন আর গ্রামীণ জনপদে দেখা যায় না।
এক সময় গ্রামীণ জনপদের অবস্থাসম্পন্ন অধিকাংশ গৃহস্থের বাড়িতেই ছিল কাচারিঘর। আর এই কাচারিঘর ছিল গ্রাম-বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতির একটি অংশ। কালের বিবর্তনে আজ কাচারিঘর বাঙালির সংস্কৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। গেস্টরুম কিংবা ড্রয়িং রুমের আদি ভার্সন কাচারিঘর এখন আর গ্রামীণ জনপদে দেখা যায় না।
কাচারিঘর মূল বাড়ির একটু বাইরে আলাদা খোলামেলা ঘর। অতিথি, পথচারী কিংবা সাক্ষাৎ প্রার্থীরা এই ঘরে এসেই বসতেন। প্রয়োজনে দু-এক দিন রাতযাপনেরও ব্যবস্থা থাকত কাচারিঘরে।
কাচারিঘর ছিল বাংলার অবস্থাসম্পন্ন গৃহস্থের আভিজাত্যের প্রতীক। কাঠের কারুকাজ করা টিন অথবা ছনের ছাউনি থাকত কাচারিঘরে। আলোচনা, শালিস বৈঠক, গল্প-আড্ডার আসর বসত কাচারিঘরে। বর্ষা মৌসুমে গ্রামের লোকজনদের উপস্থিতিতে কাচারিঘরে বসত পুঁথিপাঠ। পথচারীরা এই কাচারিঘরে ক্ষণিকের জন্য বিশ্রাম নিতেন।
বিপদে পড়লে রাতযাপনের ব্যবস্থা থাকত কাচারিঘরে। গৃহস্থের বাড়ির ভেতর থেকে খাবার পাঠানো হতো কাচারিঘরের অতিথির জন্য। আবাসিক গৃহশিক্ষকের (লজিং মাস্টার) থাকার ব্যবস্থা থাকত কাচারিঘরেই। কোনো কোনো বাড়ির কাচারিঘর সকাল বেলা মক্তব হিসেবেও ব্যবহৃত হতো।
বিলুপ্ত প্রায় ‘বাংলো ঘর’ নামে খ্যাত ‘কাচারি ঘর’। এখন সে জায়গায় স্থান করে নিয়েছে ড্রয়িং রুম। বর্তমানে যে কয়টি কাচারিঘর অবশিষ্ট আছে তাও অবহেলা-অযত্নে ধ্বংস প্রায়।
সময়ের বিবর্তনে শহরের পাশাপাশি গ্রামের পরিবার গুলোও ছোট ও আত্মকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে। তাই বিলুপ্তির পথে শতবর্ষের বাঙালি ঐতিহ্য কাচারি ঘর নামে খ্যাত বাহির বাড়ির বাংলো ঘরটি।