কেরানীগঞ্জে ত্রাসের রাজত্ব মামা-ভাগ্নের

মোঃ আঃ রহিম জয় চৌধুরী প্রকাশিত: ১০ সেপ্টেম্বর , ২০২৪ ১১:৪৯ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর , ২০২৪ ১১:৪৯ এএম
কেরানীগঞ্জে ত্রাসের রাজত্ব মামা-ভাগ্নের
সাইদের প্রধান সহযোগী তারই ভাগ্নে মো. শাকিল। গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে। এই সুযোগে বিএনপির নামে এই মামা-ভাগ্নে চক্র এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছে।

সাইদুর রহমান ওরফে সাইদ মিয়া (৪৫) ঢাকার কেরানীগঞ্জের তারানগর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির বহিষ্কৃত সভাপতি।

সাইদের প্রধান সহযোগী তারই ভাগ্নে মো. শাকিল। গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে। এই সুযোগে বিএনপির নামে এই মামা-ভাগ্নে চক্র এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছে।

জমি দখল, চাঁদাবাজি, লুটপাটসহ এলাকায় নানা অনৈতিক কাজ চলছে তাদের নেতৃত্বে। চাঁদা না দিলে দলবল নিয়ে বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারানগর ইউনিয়নের বাসিন্দা সাইদ এবং শাকিল এলাকায় প্রকাশ্যে লোকজনকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন।

তাদের মূল টার্গেট এসব এলাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ী এবং অন্য জেলা থেকে এখানে বসবাসত মানুষ। কেউ জমি কিনলে কিংবা বাড়ি করতে গেলেই চাঁদা দাবি করেন সাইদ। চাঁদা না দিলে চলে তাদের ওপর হামলা। ২০২৩ সালে একটি হত্যার ঘটনায় সাইদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর কিছুদিন আড়ালে ছিলেন তিনি। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আবার এলাকায় এসে শুরু করেছেন চাঁদাবাজি ও দখলবাণ্যিজ্য।

স্থানীয়রা জানান, সরকার পতনের পর গত ৬ আগস্ট ফখরুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে দেশি অস্ত্রসহ নিয়ে হামলা চালান সাইদ ও শাকিল। এর আগে কয়েক বছর ধরেই ওই ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন তারা। ওইদিন দুপুরে প্রকাশ্যে ওই ব্যবসায়ীর বাড়ির মূল গেট ভেঙে তাকে পরিবারের সবাইকে এলোপাতাড়ি কোপাতে এবং পেটাতে থাকে।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ফারুকুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা দাবি করলেও তিনি সাইদকে চাঁদা দিচ্ছিলেন না। এরপর ৬ আগস্ট হামলা চালিয়ে বাড়ির সবাইকে গুরুতর আহত এবং প্রায় ২৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায় তারা। তিনি বলেন, আমার মাথায় এবং সারা শরীরে কুপিয়েছে। আমার শ্যালককে কুপিয়ে মাথার মগজ বের করে দিয়েছে।

সে এখন হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। আমার স্ত্রীকে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করেছে এবং তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছে। ফ্রিজ, টিভি, কাপড়, স্বর্ণালঙ্কার এবং নগদ টাকাসহ প্রায় ২৫ লাখ টাকার জিনিসপত্র নিয়ে গেছে। ঘটনার পর থেকে আমরা সবাই পলাতক আছি। বাড়িতে যাওয়া তো পরের কথা, এলাকায়ই প্রবেশ করতে পারছি না। এ ঘটনায় আমি কেরানীগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছি।

এলাকাবাসী জানায়, ওইদিন সাইদ-শাকিল চক্র একাধিক বাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালায়। যারাই তাদের বাধা দিতে এসেছে, তাদের সবাইকে কুপিয়ে এবং পিটিয়ে জখম করেছে। তাদের কারণে এলাকার লোকজন এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।অভিযোগের বিষয়ে সাইদ মিয়া বলেন, ‘৬ আগস্ট দুপুরে ভাঙচুরের ঘটনার সময় যদি কেউ আমার কোনো ছবি কিংবা ভিডিও দেখাতে পারে, আমি ১০ লাখ টাকা জরিমানা দেব।ওই সময় আমি জেলখানায় একটা কাজে ছিলাম।’

এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি খালেদুর রহমান বলেন, ৫ আগস্টের পর অনেকদিন পুলিশি কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এখন আবার শুরু হয়েছে। হামলা-ভাঙচুর নিয়ে কেউ আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo