ক্ষমতা দখলের জন্য বিএনপি নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে নেওয়া হয়েছিল
কাশিমপুর কারাগারে বন্দী থাকা অবস্থায় মারা যাওয়া চট্টগ্রামের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপি নেতা গোলাপুর রহমানের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি সোমবার (৪ মার্চ) বিকালে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে নগরীর মোহরা চর রাঙ্গা মাটিয়াস্থ গোলাপুর রহমানের বাসভবনে যান। সেখানে তিনি তার কবর জিয়ারত করেন। তার স্ত্রী সন্তানের সাথে দেখা করে তাদের খোজ খবর নেন। গোলাপুর রহমান মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সহ সভাপতি ছিলেন।
গত বছরের ২৫ নভেম্বর গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে মৃত্যু হয় গোলাপুর রহমানের। গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশে যোগ দিতে গিয়ে তিনি পুলিশের হাতে আটক হন। পরে বিস্ফোরক আইনের একটি মামলায় তাঁকে কারাগারে নেওয়া হয়।
নিহতের পরিবারের খোঁজখবর নেওয়া শেষে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, দেশে ক্ষমতা দখলের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে হাজার হাজার বিএনপি নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে নেওয়া হয়েছিল তার অন্যতম শিকার হচ্ছে গোলাপুর রহমান। তাকে ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশের আগের দিন বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করে জেলে নেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে দেশের জেলখানাগুলোর দুরবস্থার কথা আমরা সবাই জানি। সে দুরবস্থা গোলাপ কাটিয়ে উঠতে পারেনি। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, কারাবন্দি বিএনপি নেতাকর্মীদের সঠিক চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। তাদেরকে অন্যায় ভাবে জেলে নিয়ে সেখানে নিগৃহীত করা হয়েছে। চিকিৎসাবিহীন অবস্থায় মারা যেতে হয়েছে। তবে গোলাপুর রহমানের মৃত্যু আন্দোলনে অসীম শক্তি যুগিয়েছে।
তিনি বলেন, এ পর্যন্ত বিএনপি'র ১৩ জন নেতাকর্মী চিকিৎসার অভাবে কারাগারে মারা গেছে। একটা স্বাধীন দেশের নাগরিকদের মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে নিয়ে চিকিৎসার অভাবে মরতে হচ্ছে, এটা কল্পনাতীত। এটা কোন সভ্য দেশে হতে পারে না। গোলাপুর রহমানকে আমরা হারিয়েছি। সে বিএনপি'র নিবেদিত প্রাণ নেতা ছিল। তার জানাজায় হাজার হাজার মানুষ অংশ নিয়েছে। তার প্রতি মানুষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে। তবে গোলাপুর রহমানের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে জাতীয়তাবাদী শক্তির গণতন্ত্রের যে যুদ্ধ, মানুষের অধিকারের যে যুদ্ধ, সেটাতে সে প্রাণ দিয়ে আন্দোলনকে অসীম শক্তি যুগিয়েছে।
তিনি বলেন, এই সরকার মানবতায় বিশ্বাস করে না। তারা মিথ্যা মামলা দিয়ে যেসব নেতাকর্মীদের জেলখানার নিয়ে গেছে, তাদের জীবনরক্ষা করার দায়িত্ব ছিল বর্তমান সরকারের। কিন্তু শাসক দল মানবতায় বিশ্বাস করে না বলে তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। গোলাপুর রহমান অধিকার আদায়ের সৈনিক হিসেবে প্রাণ দিয়েছে সেজন্য আমরা তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। তার জীবনের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষের মুক্তির আন্দোলনে আগামী দিনে সফলতা পাবে সেটা আমরা বিশ্বাস করি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, সি. যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ, যুগ্ম আহবায়ক এস এম সাইফুল আলম, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আহবায়ক কমিটির সদস্য এরশাদ উল্লাহ, মাহবুব আলম, নাজিম উদ্দীন আহমেদ, আনোয়ার হোসেন লিপু, চান্দগাঁও থানা বিএনপির সভাপতি মো. আজম, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন ভূইয়া, চান্দগাঁও ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. ইলিয়াস চৌধুরী, মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জানে আলম জিকু, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান প্রমূখ।