কুমিল্লার চান্দিনায় আন্দোলন চলাকালে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও জেলা মৎস্য কর্মকর্তার গাড়িতে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা।
শনিবার (৩ আগস্ট) দুপুর পৌঁনে ১টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনা-বাগুর বাস স্টেশন এলাকায় চট্টগ্রাম অভিমুখী লেনে সরকারি ওই গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে তারা। গাড়ি থেকে নেমে দ্রুত আত্মরক্ষা করেন চান্দিনা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৌম্য চৌধুরী ও তার গাড়ি চালক। বিকাল সাড়ে ৫টায় চান্দিনার কাঠেরপুল এলাকার আরও একটি প্রাইভেটকারে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। ওই ঘটনায় হামলাকারীরা কেউ শিক্ষার্থী নয় বলে দাবি করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
জানা যায়, দুপুর পৌঁনে ১২টার দিকে পাশ্ববর্তী দেবীদ্বার উপজেলার কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কিছু ছাত্রদের সাথে বিএনপি ও জামায়াতপন্থী অস্ত্রধারী দুই সহস্রাধিক দুর্বৃত্ত মহাসড়ক অবরোধ করে। এসময় চান্দিনা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আন্দোলনকারীদের মাঝে আটকা পড়েন। মুহূর্তের মধ্যেই আন্দোলনরতরা এসি ল্যান্ড এর গাড়িতে ভাংচুর চালায়। আন্দোলনরতদের হামলার মধ্যে গাড়ি থেকে নেমে দ্রুত প্রাণ রক্ষা করেন এসি ল্যান্ড ও তার গাড়ি চালক। ভাংচুরের এক পর্যায়ে গাড়িতে পেট্রোল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করে তারা।
এদিকে প্রবল বৃষ্টির মাঝেও মহাসড়কে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা। বিকাল সাড়ে ৫টায় জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন চান্দিনা থেকে কুমিল্লার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে কাঠেরপুল এলাকায় পৌঁছলে তার গাড়িতে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। চান্দিনা-বাগুর বাস স্টেশন থেকে এক কিলোমিটার পূর্ব দিকে কাঠেরপুল এলাকার বিপাশা পেট্রোল পাম্পের সামনে জেলা মৎস্য কর্মকর্তার জিপ গাড়িতে (কুমিল্লা ঘ-১১-০০২২) আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। সেখানেও কোন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি দেখা যায়নি।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা) মহাসড়কে থেমে থেমে আন্দোলন চলছে। এদিকে, এ ঘটনায় দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে চান্দিনা-বাগুর বাস স্টেশন এলাকার উভয় পাশে অন্তত ১০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। সন্ধ্যার পর থেকে ধীর গতিতে যান চলাচল শুরু করলেও গাড়িতে ইট-পাটকেল ছুড়তে দেখা গেছে। এতে চালক ও যাত্রীরা চরম শঙ্কায় পড়েন।
এ ব্যাপারে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাবের মো. সোয়াইব জানান, আন্দোলনে কিছু শিক্ষার্থী থাকলেও তাদেরকে আমরা বুঝিয়ে বলায় তারা বিক্ষোভ শেষে মহাসড়ক থেকে সরে যায়। দুস্কৃতকারীরা এসি ল্যান্ডের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেই থেমে থাকেনি। প্রথম ঘটনার প্রায় প্রায় ৫ ঘন্টা পর জেলা মৎস্য কর্মকর্তার গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। যারা এসব ঘটনা ঘটিয়েছে তারা কেউ শিক্ষার্থী নয়।