মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের বালিগাঁও এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধে এক কৃষকের ফসলি জমিতে রাসায়নিক আগাছা নাশক প্রয়োগ করে ৩০শতক বোরো ধানক্ষেত’ নষ্ট করেছেন এমন অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। সোমবার রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের বালিগাঁও এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল ) দুপুরে ভুক্তভোগী কৃষক আব্দুল আব্দুল আজিজ বিষয়টি অভিযোগ করে সাংবাদিকদের জানান। পরে দুপুরে কমলগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী কৃষক আব্দুল আজিজ।
ভুক্তভোগীর করা থানায় অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত জমি সংক্রান্ত ও রেকর্ড সংক্রান্ত বিরোধ হয়ে আসছে একই এলাকার মৃত আব্দুল বাছিত মিয়ার ছেলে মুমিন মিয়ার সাথে। যা বর্তমান কোর্টে চলমান রয়েছে। সোমবার রাত ৮টার দিকে ৩০শতাংশ জমিতে লাগানো বোরো ধান ক্ষেতে কীটনাশক বিষ প্রয়োগ করে ধান গাছ মেরে ফেলে একই এলাকার মুমিন মিয়া। এতে আব্দুল আজিজ এর (৩০শতাংশ) জমির ধান পুড়ে নষ্ট হয়ে যায়।
অভিযোগ করে কৃষক আব্দুল আব্দুল আজিজ বলেন- এই মৌসুমে প্রায় ১৫ হতে ২০ মণ ধান হতো। সেই ফসল মুমিন মিয়া নষ্ট করে ফেলেছে। জমি নিয়ে বিরোধ চলছে, সেটা আদালত ফয়সালা দিবেন। কিন্তু সে কেন আমার ফসল নষ্ট করে দিলো। এই অন্যায়ের সঠিক বিচার চান তিনি। এতে তার প্রায় ৩০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে বলেও তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, আমার ক্রয়কৃত জায়গা (কুমড়াকাপন মৌজার ৭৯ জেল নং এর-১২৮৬) দাগ নম্বর ভুল ক্রমে আমার এলাকার মৃত আব্দুল বাছিত মিয়ার ছেলে মুমিন মিয়ার নামে চলে যায়। আমি টাকা দিয়েও বলেছি দাগ নম্বর টা ঠিক করে দিতে। কিন্তু দিবে দিবে বলে দেয় নি। সে বিভিন্ন সময় তার জায়গা দাবী করে আসছে। আমি আদালতে রেকর্ড সংশোধনী মামলা করেছি। সেটা বিচারাধীন।
স্থানীয়রা সংবাদকর্মীদের জানান, মাত্র ধান বের হতে শুরু করেছে।প্রায় ৩০ শতক ধান এভাবে রাসায়নিক- বিষ প্রয়োগ করে মারা উচিত হয়নি। যদি ধানগুলো পাকা হত আর কেটে নেওয়া হত তাহলে ভালো হত। কিন্তু এভাবে ফসলি ধান নষ্ট করা ঠিক হয়নি। সুষ্ঠু তদন্ত সহ বিচার দাবি করেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী এর প্রতিবেশী বলেন, ‘জায়গা নিয়ে পূর্ব শত্রুতা রয়েছে আব্দুল আজিজের সাথে মুমিন মিয়ার। এটা মূলত রেকর্ড সংক্রান্ত বিষয়। আমি জানি সেটা আদালতে বিচারাদিন আছে। কিন্তু রাতের আধারে এভাবে বিষ দিয়ে ধানগুলো নষ্ট করা ঠিক হয়নি মুমিন মিয়ার। এঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সহ বিচার দাবি করেন তিনি।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মুমিন মিয়া বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। এই জায়গা খরিদ সুত্রে আমার। আমি দেশের বাহিরে ছিলাম দীর্ঘদিন। দেশে না থাকায় প্রভাব বিস্তার করে জোর পূর্বক দখল করে নিয়েছেন আব্দুল আজিজ ও তার ভাইয়েরা।
জায়গার রেকর্ড সংক্রান্ত কোনো মামলা আমার জানা নেই। মঙ্গলবার এই জায়গার উত্তরে আমার কৃষি জমিতে ঔষুধ দিচ্ছিলাম। তখন আব্দুল আজিজ সহ উনার ভাইরা আমাকে দেশীয় অস্র দিয়ে মারতে আসে। পরে আমি থানায় জিডি ও সেনাবাহিনীর কাছে লিখিত অভিযোগ দেই।’
তিনি বলেন, কে বা কারা অতিরিক্ত কীটনাশক বিষ দিয়ে ধান নষ্ট করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। আমি এর সঠিক তদন্তের দাবি জানাই।’
এ-ব্যাপারে কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, ‘এমন ঘটনায় দুই পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।