চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি ঘড়ির কাটায় তখন সময় সকাল ১০টা। ওই সময়ে নওগাঁ সদর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে ঢল নামে সাধারন জনতার। যাদের প্রত্যেকেরই নজর সামনের মঞ্চে বসা দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার (তদন্ত) জহুরুল হক এর প্রতি। যেখানে সদর উপজেলার সরকারি-বেসরকারি ও শায়িত্ব শাসিত প্রতিষ্ঠানে সেবা পেতে ঘুষ, দুর্নীতি ও হয়রানির শিকার হওয়া ভুক্তভোগীদের ৩৯টি অভিযোগের গণশুনানি করেন তিনি। এসবের মধ্যেই ১টি অভিযোগ ছিলো নওগাঁ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের বিরুদ্ধেও।
চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি ঘড়ির কাটায় তখন সময় সকাল ১০টা। ওই সময়ে নওগাঁ সদর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে ঢল নামে সাধারন জনতার। যাদের প্রত্যেকেরই নজর সামনের মঞ্চে বসা দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার (তদন্ত) জহুরুল হক এর প্রতি। যেখানে সদর উপজেলার সরকারি-বেসরকারি ও শায়িত্ব শাসিত প্রতিষ্ঠানে সেবা পেতে ঘুষ, দুর্নীতি ও হয়রানির শিকার হওয়া ভুক্তভোগীদের ৩৯টি অভিযোগের গণশুনানি করেন তিনি। এসবের মধ্যেই ১টি অভিযোগ ছিলো নওগাঁ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের বিরুদ্ধেও।
সারাদেশে অনিয়ম দুর্নীতির আতুড়ঘর খ্যাত এ দপ্তরের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী ছিলেন নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার রামরামপুর গ্রামের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন। ভাগ্নের পাসপোর্ট করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হওয়ার চিত্র লিখিতভাবে তুলে ধরে দুদককে জানিয়েছিলেন তিনি। তবে ওইদিন গণশুনানির মঞ্চে উঠেই সুর পাল্টে যায় এ অভিযোগকারীর। সমস্যাটি সমাধান হয়ে গেছে বলে দুদক কমিশনারকে জানান দেলোয়ার হোসেন।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নওগাঁ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক সাধন সাহাকে উদ্দেশ্য করে দুদক কমিশনার বলেছিলেন, “দ্রুত কাজটি করে দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। দুদক গনশুনানি না করলে হয়তো উনাকে আরো ১ মাস ঘুরতে হতো। আরো যারা এই ধরনের সমস্যায় পড়ছেন তাঁদের কাজগুলোও দ্রুত করে দিন। সেই সাথে অফিস দালালমুক্ত করার নির্দেশনা প্রদান করেন দুদকের এই কমিশনার।
ওইদিন অডিটোরিয়ামে দিনব্যাপী দুদকের গণশুনানীতে ধরাশায়ী হতে হয় অনেক দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। দুদকের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে এমন আয়োজন অব্যাহত রাখার দাবী জানায় স্থানীয়রাও। এ গণশুনানির পর অফিসটিতে আদৌ কতটুকু পরিবর্তন এসেছে তা অনুসন্ধানে সম্প্রতি সরেজমিন নওগাঁ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে গেলে দেখা মেলে বেশ কিছু পরিবর্তনের। প্রবেশ পথে দায়িত্বরত আনসার সদস্য কাগজপত্র দেখে সেবাগ্রহীতাদের ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন। এক সময়ে যে অফিসের ভেতর দালালদের যাতায়াত ছিলো তা বর্তমানে একেবারেই নেই। অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কাজের গতি ছিলো চোখে পড়ার মতো। দ্রুত কাজ সম্পন্ন হওয়ায় অফিসের ভেতরে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোগান্তী পোহাতে হয়নি দূর দূরান্ত থেকে আসা সেবাগ্রহীতাদের।
গত বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সেবাগ্রহীতা সেজে পাসপোর্ট অফিসে প্রবেশের পর ছবি উঠানোর লাইনে দাঁড়ায় প্রতিবেদক। ওই লাইনে দাঁড়িয়েই কথা হয় মান্দা উপজেলার মৈনম গ্রাম থেকে আসা কুরবান আলীর সঙ্গে। পাসপোর্টে কেমন খরচ পড়লো ও মাধ্যম সম্পর্কে জানতে চাইলে কুরবান আলী বলেন, একটি বেসরকারি কোম্পানীতে চাকুরীর সুবাদে ঢাকায় থাকতে হয়। আগের এমআরপি পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ায় নতুন ই-পাসপোর্ট করতে এসেছি। দালাল ছাড়াই নিজে নিজেই অনলাইনে আবেদন করে ৪৮ পৃষ্টার ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্টের জন্য ৫ হাজার ৭৫০ টাকা অনলাইনে জমা দিয়েছি। এখানে আসার পর কাগজপত্রে কিছু ত্রুটি থাকায় শুরুতে সমস্যায় পড়তে হয়েছিলো। তবে এখানকার কর্মচারীরা যথেষ্ট আন্তরিক ছিলো। তাঁদের পরামর্শে সহকারী পরিচালকের কক্ষে গিয়ে ত্রুটি সমাধান করলাম। এখন ছবি উঠলেই দুঃশ্চিন্তামুক্ত।
এর কিছুক্ষণ পর কুরবান আলী ছবি উঠানোর কক্ষে প্রবেশ করেন। কোন ধরনের হয়রানি ছাড়াই ছবি উঠিয়ে পাসপোর্ট ডেলিভারী স্লিপ হাতে নিয়ে হাসিমুখে বের হয়ে যান। ওইদিন কুরবান আলীর মতোই দালালের মাধ্যমে না এসেও দ্রুত সেবা পেয়ে হাসিমুখে পাসপোর্ট অফিস থেকে বের হতে দেখা যায় লিয়াকত হোসেন, তানজিল হোসেন জিহাদ, তানজির রহমান আকাশসহ অসংখ্য সেবাগ্রহীতাকে।
নওগাঁ সদর উপজেলার হাঁপানিয়া ইউনিয়নের মখরপুর গ্রামের বাসিন্দা লিয়াকত হোসেন বলেন, দুদকের গণশুনানিতে উপস্থিত ছিলাম। ওইদিন দুদক কমিশনারের কথা শুনে ভালো লেগেছে। তাই গণশুনানির ২ দিনের মধ্যেই গত ২০ ফেব্রুয়ারি অনলাইনে নিজে নিজেই ১০ বছর মেয়াদী ৪৮ পৃষ্টার ই-পাসপোর্টের আবেদন করেছি। শুধুমাত্র ৫ হাজার ৭৫০ টাকা অনলাইনে জমা দিতে হয়েছে। এর সাথে অনলাইনে পেমেন্টের সময় এবং প্রিন্ট বাবদ সামান্য কিছু টাকা খরচ হয়েছে। কাগজপত্র প্রিন্ট করার পর অফিসে এসে কি কি কাগজ সংযুক্ত করতে হবে তাঁর বিস্তারিত জেনে গেছি। কেউ হয়রানি করলে দুদকে লিখিত অভিযোগ করার পূর্ব প্রস্তুতি নিয়েই এসেছিলাম। সবকিছুই ঠিকঠাক মনে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত হয়রানি ছাড়াই পাসপোর্টের জন্য ছবি উঠালাম।
তানজিল হোসেন জিহাদ ও তানজির রহমান আকাশ নামে দুইজন সেবাগ্রহীতা বলেন, পাসপোর্টের আবেদন ঘরে বসে নিজে নিজে করাই ভালো। অথবা শহরের ভেতরে অবস্থিত বিভিন্ন কম্পিউটারের দোকানে আবেদন করা যেতে পারে। পাসপোর্ট অফিসের আশেপাশে গড়ে উঠা কম্পিউটারের দোকানে এলেই দালালদের খপ্পরে পড়তে হবে। আমরাও এসে প্রথমে দালালের খপ্পরে পড়ার উপক্রম হয়েছিলো। তবে দালালদের কথায় সাড়া না দিয়ে নিজেরাই আবেদন জমা দিলাম। ছবি উঠানোর পর ডেলিভারি স্লিপও পেলাম। এতে একটা বিষয় স্পষ্ট এখানে দালাল ছাড়াও পাসপোর্ট করা সম্ভব।
নতুন পাসপোর্টের আবেদনকারীদের সঙ্গে কথা বলা শেষে পাসপোর্ট ডেলিভারী কাউন্টারে গেলে সেখানেও দেখা মেলেনি উপচে পড়া ভীড়ের। এখানে আসা প্রত্যেক সেবা প্রত্যাশীকেই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট ডেলিভারি দেন ওই কাউন্টারে দায়িত্বে থাকা কর্মচারী। সেখানে কথা হয় শহরের খাঁস নওগাঁ মহল্লা থেকে পাসপোর্ট ডেলিভারি নিতে আসা মমতাজ বেগমের সঙ্গে।নতুন পাসপোর্ট করানোর অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে চাইলে ওই নারী বলেন, বেশ কিছুদিন আগে স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়েছে। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। সেখান থেকে যেটুকু আয় করেন সেটা দিয়েই অর্ধাহারে অনাহারে থাকতে হয়। তাই দেশের বাহিরে শ্রমিক হিসেবে যাওয়ার উদ্দেশ্যে জন্য পাসপোর্ট করতে গত ২৫ জানুয়ারিতে এই অফিসের বাহিরের একটি ফটোকপির দোকানে গিয়েছিলাম। জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজের নাম, বয়স এবং মায়ের নাম সংশোধন করার কারণে ওই দোকানের দালাল পাসপোর্ট পাইয়ে দিতে ৭ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেছিলো। এতো টাকা দেওয়ার মতো সামর্থ আমার ছিলো না। তাই অফিসের গেইটে দাঁড়ানো আনসারকে জানিয়েছিলাম। পরে ওই আনসার আমাকে পাসপোর্ট অফিসের দ্বিতীয় তলায় স্যারের (সহকারী পরিচালক) রুমে নিয়ে যান। স্যারকে সব সমস্যার কথা খুলে বললাম। এরপর তিনি যে পরামর্শ দিয়েছেন সেই অনুযায়ী ৪৮ পৃষ্টার ৫ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট শুধুমাত্র ৪ হাজার ২৫ টাকা জমা দিয়ে আবেদন করি। ঘুষ ছাড়াই ১ মাসের মধ্যেই পাসপোর্ট ডেলিভারি পেলাম।
মমতাজ বেগমের সূত্র ধরে এই প্রতিবেদক যান পাসপোর্ট অফিসের বাহিরে গড়ে উঠা অন্তত ২০টি ফটোকপির দোকানে। সেখানে গেলে চোখে পড়ে পাসপোর্ট অফিস ও পুলিশ ম্যানেজ বাবদ সেবাগ্রহীতাদের প্রত্যেক আবেদনে অন্তত সাড়ে ৩ হাজার টাকা রশিদ বহির্ভূত আদায়ের। মূলত এসব দালালরা পাসপোর্ট অফিসের ভেতরের পরিবর্তনকে আড়াল করতে প্রতিনিয়ত তৈরী করেন নানা ধরনের গল্প। তাঁদের গল্প শুনে দ্রুত ও ঝামেলামুক্তভাবে পাসপোর্ট পাওয়ার আশায় ভীত হয়ে পড়েন এক শ্রেণীর সাধারন ও নিম্ন আয়ের মানুষ। জনসচেতনতার অভাবে দালালদের খপ্পরে পড়ে মোটা অংকের টাকা খরচ করতে হয় তাঁদের। দালালরা কীভাবে সেবা গ্রহীতাদের ফাঁদে ফেলছে? তা আরো ভালোভাবে বুঝতে পাসপোর্টের আবেদনকারী হিসেবে হাতে কাগজপত্র নিয়ে একটি দোকানের সামনে দিয়ে হাঁটতে শুরু করেন ঢাকা পোস্টের এই প্রতিবেদক।
হাতে কাগজপত্র দেখা মাত্রই প্রতিবেদককে দোকানের ভেতরে ডেকে নেন হিমেল নামে এক দালাল। হিমেলের দোকানটি পাসপোর্ট অফিসের পার্শবর্তী দুর্নীতি দমন কমিশন অফিস সংলগ্ন। কাগজে কলমে এই দোকান একটি জামাকাপড় বিক্রির। নাম ‘হুসায়ইরা গার্মেন্টস এন্ড বস্ত্রালয়’। অথচ এর ভেতরেই কম্পিউটার নিয়ে বসে দালালের ভূমিকায় কাজ করেন দোকানটির স্বত্বাধিকারী হিমেল।
হিমেলের দোকানের ভেতরে প্রবেশ করা মাত্রই প্রতিবেদকের কাছে জানতে চাওয়া হয় ‘কি কাজে এসেছেন?’। এরপর নির্ধারিত সময়ের পাসপোর্ট পাওয়ার উপায় এবং আবেদনের পদ্ধতি জানতে চাইলে হিমেল বলেন, এখন পাসপোর্ট করতে হলে অফিস এবং পুলিশ ম্যানেজ বাবদ বাড়তি সাড়ে ৩ হাজার টাকা দিতে হবে। এই টাকা দিলে আমরাই আপনার সব কাজ করে দিবো। এই টাকা ছাড়া আবেদন করলে রশিদ বহির্ভূত ৩০০ টাকা ফি নিবো। এরপর আপনি নিজে নিজে পাসপোর্ট জমা দিতে গেলে নিশ্চিত ফাইল জমা নিবে না। অফিসে গিয়ে বার বার হয়রানির শিকার হবেন। প্রত্যেক ফাইলে পুলিশকেই ক্লিয়ারেন্স বাবদ ১ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। বাকীটা পাসপোর্ট অফিসকে দিয়ে আমরা নিজেরা সামান্য কিছু লাভ করি।
ঘুষের টাকা কমানোর জন্য অনুরোধ করলে কম্পিউটারে বসা হিমেল বলেন, সাড়ে ৩ হাজারের ১ পয়সা কম হলে চ্যালেঞ্জ করছি কেউই আপনার পাসপোর্ট করিয়ে দিতে পারবে না। এখানে ঘুষ ছাড়া ফাইল হাতে নেয় না অফিসাররা। দিনের পর দিন হয়রানি হতে হবে। এরপরেও বাজার যাচাই করতে চাইলে অন্য ফটোকপির দোকান ঘুরে আসার পরামর্শ দেন হিমেল।
হিমেলের কথা অনুযায়ী পার্শবর্তী কয়েকটি ফটোকপির দোকান ঘুরলে তাঁদের কেউ ৪ হাজার আবার কেউ ৫ হাজার টাকা ঘুষ দাবী করেন। চুক্তির এক পর্যায়ে দোকানগুলো সাড়ে ৩ হাজার টাকার কম হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন। এসব দালালদের খপ্পরে পড়া এক কলেজ শিক্ষার্থী ইমন বর্মণ। পত্নীতলা উপজেলার বিরিঞ্চি গ্রাম থেকে আসা এই সেবা গ্রহীতা বলেন, যত দ্রুত সম্ভব ইন্ডিয়া যেতে হবে। তাই জরুরীভাবে ৪৮ পৃষ্টার ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট পেতে এক দালালের মাধ্যমে আবেদন করেছি। চালানে ৮ হাজার ৫০ টাকা জমা উল্লেখ থাকলেও দালালকে ১৩ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী দুই সপ্তাহের মধ্যে সে পাসপোর্ট পাইয়ে দিবে। অথচ এখানে আসার পর জানলাম এই পরিমাণ টাকা ব্যাংকে জমা দিলে এমনিতেই দুই সপ্তাহের মধ্যে পাসপোর্ট পাওয়া যায়। এখন কিছুই করার নেই। দালাল যা বুঝিয়েছে সেটা বুঝে প্রতারিত হয়েছি। দালাল ছাড়া আসলেও এখানে সহজেই কাজ হতো।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে নওগাঁ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক সাধন সাহা বলেন, গত বছরের নভেম্বরে এখানে যোগদান করেছি। এই অল্প সময়ে সেবাগ্রহীতারা যাতে দালালের খপ্পরে না পড়ে সেজন্য অফিসের বাইরে আমার ব্যক্তিগত নম্বর দিয়ে রেখেছি। ওই নম্বরে আসা প্রতিটা কল রিসিভ করা হয়। অফিসের ভেতরে এবং বাইরে সিসিটিভি ক্যামেরায় প্রতিনিয়ত পরিস্থিতি পর্যক্ষেণ করা হয়। সেবাগ্রহীতা ছাড়া অন্য কাওকে অফিসে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। নিজে গিয়েও সরাসরি সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে কথা বলি। তাই এখানে দালাল প্রবেশের কোন সুযোগ নেই।তিনি আরও বলেন, এখানে যোগদানের পর সঠিক সময়ে পাসপোর্ট ডেলিভারি নিশ্চিত করেছি। আবেদনকারীদের ফাইলে কোন ত্রুটি থাকলে সরাসরি তাঁদের সঙ্গে আমি কথা বলি। কাওকে ফিরিয়ে না দিয়ে প্রত্যেকের আবেদন জমা নেওয়া হয়। অফিসের বাহিরে ফটোকপির নামে বাঙের ছাতার মতো অসংখ্য দোকান গড়ে উঠেছে। অথচ এতো দোকানের এখানে প্রয়োজন ছিলো না। এসব দোকানের কারোর সাথে আমি বা আমার অফিসের কোন কর্মচারীর সম্পৃক্ততা নেই। এদের কাওকে অফিসে ঢুকতে দেওয়া হয় না। তাঁদের মাধ্যমে কেউ হয়রানির শিকার হলে আমরা নিজেরাও প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করি।
দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় নওগাঁর উপ পরিচালক মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান বলেন, সদর উপজেলায় প্রথমবারের মতো গণশুনানি হলেও ওইদিন সাধারন মানুষদের অংশগ্রহণ ছিলো চোখে পড়ার মতো। দুদককের এই উদ্যোগকে সকলে স্বাগত জানিয়েছেন। এই গণশুনানির মধ্য দিয়ে দুদকে অভিযোগ প্রদানের প্রক্রিয়া সম্পর্কে সকলে সঠিক ধারণা পেয়েছেন। পাসপোর্ট অফিসসহ যেসব দপ্তরের বিরুদ্ধে সেদিন অভিযোগের শুনানি হয়েছে কমিশনার স্যারের নির্দেশনায় সেসকল দপ্তরসহ অন্যান্য সকল দপ্তরে আমাদের নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। আমরা সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গেও কথা বলছি। ঘুষ, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার বা অর্থ আত্মসাতের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দুদক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সবসময় সচেষ্ট রয়েছে।