এ যেন হলুদের হাতছানি। গাছে সবুজ পাতার চাইতে হলুদ ফুলের সমারোহ বেশি ।পুরো গাছ জুড়ে হলুদের রাজত্ব। গ্রীষ্মের খরতাপেও নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার রাস্তার ধারে সোনারঙা তরতাজা এই ফুল শোভা ছড়াচ্ছে ।
ফুলটির নাম সোনালু। পথচারীদের কেউ এই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। কেউ আবার ছিড়ে নিয়ে যাচ্ছেন প্রিয়জনের জন্য। উপজেলার বিভিন্ন সড়কের পাশে ফুলের গাছ দেখা মিলছে এই ফুলের।
মোকারম হোসেনের 'ফুল' নামের বইয়ে লেখা আছে, বৈশাখ মাসেই এই গাছে রাশি রাশি ফুল ফুটে । গরমের শুরুতে একটু খেয়াল করলেই সোনালু ফুলের অপরূপ শোভা চোখে পড়বে। এ সময় ঝাড়বাতির মতো ঝুলে থাকা বড় বড় থোকার হলদে সোনালি রঙের ফুলগুলো চারপাশ আলোকিত করে রাখে। ফুল দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি তার নামেরও বাহার-সোনালু, সোনাইল, সোঁদাল, বান্দঙ্গলেও। শীতকালে পাতা ঝরার পর বসন্তে যেন মরার মতো দাঁড়িয়ে থাকে গাছটি। পাশাপাশি দু-তিনটি গাছে একই সঙ্গে ফুল ফুটলে তা দেখতে হয় দারুণ। সোনালু ফুলের কাস্তের মতো বাঁকা গর্ভকেশর দিয়ে শিশুরা মালা গাঁথে। ফল লম্বা, লাঠির মতো গোল এবং সে জন্যই নাম বান্দরলাঠিরলাঠি, আম্বলতস, কর্ণিকার ইত্যাদি।
সোনালু ছোট আকারের দেশি গাছ। জন্মে যত্রতত্র-মাঠের পারে, খালের ধারে, এমনকি বনজ। পাকা ফলের শাঁস মিষ্টি। নানান কাজে লাগে। ফুল, ফল, পাতা বানরের প্রিয় খাবার।
বৈজ্ঞানিক নাম Cassia fistula। পরিবার Caesalpinaceae। জন্মস্থান বাংলাদেশ, ভারতসহ পূর্ব এশিয়া।
পীরপুকুরিয়া গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি জালাল উদ্দিনের বাড়ির সামনে এই ফুলের গাছ রয়েছে। গাছটির দিকে দেখিয়ে দিতেই তিনি বললেন, এটা বান্দরলাঠি গাছ। আমি অনেকদিন থেকেই এই গাছের ফুল দেখে আসছি। গাছটাতে হলুদ ফুলে ছেয়ে গেলে দেখতে খুব ভালো লাগে। নতুন প্রজন্ম হয়তো এই ফুলটার নামই জানে না।
চৌরাপাড়া ফাজিল মাদ্রাসার জীববিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মোঃ আকতারুল ইসলাম বলেন, ফুল হলো সৌন্দর্যের প্রতীক। প্রকৃতির অপরূপ দান এই ফুলের শোভা। প্রকৃতি আমাদের উজাড় করে তার সৌন্দর্য বিলিয়ে দেয়। আমাদের উচিত মাঝেমধ্যে প্রকৃতির সান্নিধ্যে এসে এই অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করা এবং বিভিন্ন ফুলের গাছ রোপণ করা।