প্রাক্তন প্রেমিকের অন্তরঙ্গ ছবি ও ভিডি প্রকাশ, বিচার না পেয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা

মাসুদ রেজা ফিরোজী প্রকাশিত: ২০ ডিসেম্বর , ২০২৩ ০৮:৪৬ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর , ২০২৩ ০৮:৪৬ এএম
প্রাক্তন প্রেমিকের অন্তরঙ্গ ছবি ও ভিডি প্রকাশ, বিচার না পেয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা
নিহত গৃহবধূ থানায় মামলার চেষ্টা করলেও পুলিশ মামলা নেয়নি বলে নিহতের পরিবারের এমন অভিযোগ করেন

মাদারীপুরে প্রাক্তন প্রেমিকের সাথে বিয়ে পূর্ববর্তী অন্তরঙ্গ সম্পর্কের ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে প্রকাশের ঘটনায় বিচার না পাওয়া এক গৃহবধূর আত্মহত্যা করেছে। নিহত গৃহবধূ হামিদা আক্তার (২৫) মাদারীপুর সদর  উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের টেকেরহাট এলাকার হালিম ঢালীর মেয়ে। ঘটনাটি মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের টেকেরহাট এলাকায় ঘটেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সদর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গেপাঠিয়ে দিয়েছে।

পুলিশ ও নিহতের পরিবার থেকে জানা গেছে, ৯ বছর আগে শরীয়তপুরের তুলসির চর এলাকার আশরাফ খানের ছেলেশামীম খানের সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচয় থেকে প্রেম হয়ে দুজনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়। পরে শামীম খানের সাথে হামিদা আক্তারের প্রেম ভেঙ্গে যায়। পরে সিলেটের লিটন হোসেন নামের আরেক তরুণের সাথে তার মোবাইল ফোনে প্রেম হয়। পরবর্তীতে লিটনকে ভালোবেসে হামিদা বিয়ে করে সংসার করতে শুরু করেন। বিয়ের পরেই হামিদার একটি ছেলে সন্তান হয়েছে। যার বর্তমান বয়স ৮ বছর। বর্তমানে হামিদার স্বামী লিটন হোসেন সৌদি আরব প্রবাসী। এই সুযোগে শামীম খান পুনরায় হামিদার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে। এবং হামিদা বিয়ের পূর্বে শামীম হোসেনের সাথে প্রেমের সম্পর্কের সময়ের দুইজনের মেলামেশার অন্তরঙ্গ ছবি ও ভিডিও সৌদিপ্রবাসী স্বামী লিটনের কাছে পাঠানো হলে হামিদার সাথে লিটনের দাম্পত্য জীবনে চরম অশান্তি দেখা দেয়।

এই ঘটনার পরে নিহত গৃহবধূ থানায় মামলার চেষ্টা করলেও পুলিশ মামলা নেয়নি বলে নিহতের পরিবারের এমন অভিযোগ করেন। নিরুপায় হয়ে হামিদা ১৮ ডিসেম্বর মাদারীপুর আদালতে শামীমের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করলে শামীম খান আরো ক্ষিপ্ত হয়ে হামিদা ও তার স্বামী লিটনের সাথে পুরোনো সম্পর্কের বিষয় নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় হামিদা আক্তারের মঙ্গলবার বিকেলেই বিষ পান করে। এতে গুরুতর অবস্থায় মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।এই বিষয়ে নিহত হামিদার ছোট বোন হালিমা আক্তার বলেন, আমার বোনের সাথে বিয়ের আগে শামীমের ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। সেই পরিচয়ের বিষয় নিয়ে আমার দুলাভাই ও বোনকে নানা ধরনের হুমতি ধামকি শামীম দিয়ে আসছিল। ওই শামীমের কারণেই আমার বোনকে মরতে হয়েছে। আমরা এই মৃত্যুর বিচার চাই। গতকালকে (১৮ ডিসেম্বর) কোর্টে আমার বোন শামীমের বিরুদ্ধে মামলা করায় সে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। ওর জন্যই আমার বোন মারা গেছে। আমরা বিচার চাই।

এই বিষয়ে মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ.এইচ.এম সালাউদ্দিন বলেন, নিহত হামিদা আদালতে একটি মামলা দায়ের করার পরের দিনই আত্মহত্যা করেছে। আমরা লাশ উদ্ধার করে মন্তব্য জন্য মর্গেপাঠিয়েছি। এবং মৃত্যুর কারণ উৎঘাটনের জন্য তদন্ত করছি। তদন্ত প্রতিবেদন পেলেই আমরা মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে পারব।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo