চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে চাঞ্চল্যকর ও ক্রু-লেস হত্যার আসামী মেহেদী হাসান শুভকে আটক করেছে থানা পুলিশ। ১৯শে জানুয়ারী শুক্রবার বিকালে থানা পুলিশ সংবাদ সম্মেলন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পংকজ কুমার দে। এসময় তিনি বলেন,ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের সহযোগীতা মমতাজ বেগম রিক্তা (৩৫) এর চাঞ্চল্যকর ও ক্রু-লেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন এবং আসামী গ্রেফতার, হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত হাতুরী ও কাটার উদ্ধার করা হয়। গত ১৭ জানুয়ারী বুধবার উপজেলার ১৬নং রূপসা দক্ষিন ইউনিয়নের চরমান্দারী ভোলা গাজী বেপারী বাড়ীর বিউটিসিয়ান মমতাজ বেগম রিক্ত হাত পায়ের রগ কাটা রক্তাক্ত অবস্থায় কম্বল দ্বারা মোড়ানো মৃতদেহ তাহার বসত ঘরের ভিতরে বাথরুমের মধ্যে কম্বল দিয়ে ঢাকা চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে চাঞ্চল্যকর ও ক্রু-লেস হত্যার আসামী মেহেদী হাসান শুভকে আটক করেছে থানা পুলিশ।
পড়ে থাকতে দেখে পার্শ্ববর্তী বাড়ীর চাচাতো ভাই মাহফুজুর রহমান জুয়েল জাতীয় জরুরী সেবা-১৯৯৯ এর মাধ্যমে সংবাদ দিলে তাৎক্ষনিক থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। ক্রাইম সিনের সুরক্ষা প্রদান পূর্বক ঘটনাতুলটি চতুরদিক থেকে ঘেরাও করে রাখা হয় এবং প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে। এটি একটি নিশংস ও নিমর্ম ক্লু-লেস হত্যা কান্ড। মমতাজ বেগম রিক্তার স্বামী হারুনুর রশিদ দীর্ঘ দিন যাবৎ দুবাই প্রবাসী। মমতাজ বেগম রিক্তা বিবাহের পর থেকে তার পিতার বাড়ীতেই বসবাস করে এবং তার পিতার কাছ থেকে জমি পেয়ে একটি টিনসেড বিল্ডিং তৈরি করে স্বামী সহ বসবাস করে। সে গৃদকালিন্দিয়া বাজারে বধুয়া বিউটি পার্লার নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালায়। মুলত রিক্তা তাহার পিতার বাড়ীতে জমি পাওয়া এবং ঐ জমিতে টিনসেড বিল্ডিং ঘর নির্মান করে বসবাস করার বিষয় নিয়েই তাহার আপন বড় ভাই আব্দুল মালেক বেপারী সহ তাহার স্ত্রী কহিনুর বেগম এবং ছেলে মেহেদী হাসানশুভ্র দের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে তাহাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। ইতিমধ্যে আব্দুল মালেক বেপারী তাদের বাড়ীর তাহার অংশে একটি বিল্ডিং ঘর নির্মান কাজ করিতেছে। এই কাজ দেখাশুনা করার জন্য প্রায় সময়ই তাহার ছেলে মেহেদী হাসান শুভ ঢাকা হতে বাড়িতে আসে। মেহেদী হাসান শুভ ঢাকায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা করে। সে গত ৪ জানুয়ারী ঢাকা থেকে #৩৯;তাদের বাড়ির কাজ দেখাশুনা করার জন্য আসে। সে নলগোড়া এলাকায় তার নানার বাড়িতে থেকে চরমান্দারী এসে প্রতিদিন তাহাদের বাড়ির কাজ দেখাশুনা করে।
গত ১৭ জানুয়ারী সন্ধ্যা অনুমান ০৬.০০ ঘটিকার সময় মমতাজ বেগম বিল্ডা গৃদকালিন্দিয়া বাজারে তার নিজের বিউটি পার্লার থেকে বাড়িতে আসার পর আসামী মেহেদী হাসান শুভকে তাহাদের বাড়িতে পেয়ে তাহার ঘরে ডেকে নিয়ে যায়। তখন বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলার একপর্যায়ে তাহার বড় ভাই আব্দুল মালেক বেপারী ও তাহার স্ত্রী কহিনুর বেগম এর বিষয়ে দোষারোপ করে বিভিন্ন কথা মেহেদী হাসান শুভকে বলার পর শুভ ক্ষিপ্ত হয়ে তাহার ফুফু মমতাজ বেগম রিক্তার ঘর থেকে বের হয়ে গিয়ে তাহাদের নির্মানাধীন বিল্ডিং ঘর থেকে একটি হাতুরি ও একটি কাটার নিয়ে আসে এবং পিছন থেকে স্বজোরে মাথার পিছনে আঘাত করলে রিক্তা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তাৎক্ষনিক ভাবে মেহেদী হাসান শুভ এর গায়ে জড়িয়ে থাকা চাদর দিয়ে রিক্তার গলায় পেচিয়ে তাহার বসত ঘরের ভিতরে বাথরুমের মধ্যে নিয়ে যায়। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য মেহেদী হাসান শুভ কাটার দিয়ে। হাত এবং পায়ের রগ কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে। ঘরে ভিতরে খাটের উপর থাকা কম্বল দিয়ে ঢেকে রেখে চলে যায়। সে সময় বিদ্যুৎ না থাকায় অন্ধকারের মধ্যে মেহেদী হাসান শুভ অনায়াসে সেখান থেকে পালিয়ে তার নলগোড়া তাহার নানার বাড়িতে চলে যায়। থানা পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে এবং বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত চুলচেরা বিশ্লেষণ করে ঘটনার পর পরই মেহেদী হাসান শুভ সহ দুইজনকে আমাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে একপর্যায়ে মেহেদী হাসান শুভ ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত আমাদের কাছে জানায় এবং তাহার দেওয়া তথ্য মোতাবেক চরমান্দারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন পুকুর থেকে হত্যা কান্ডে ব্যবহৃত হাতুরি ও কাটার উদ্ধার করা হয়। এই বিষয়ে মমতাজ বেগম রিক্তার দুবাই প্রবাসী স্বামী হারুনুর রশিদ বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন মামলা নং-১৯ এসময় উপস্থিত ছিলেন, ফরিদগঞ্জ থানা অফিসার ইনর্চাজ সাইদুল ইসলাম, ওসি তদন্ত প্রদীপ মন্ডল, ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মামুনুর রশিদ পাঠান প্রমূখ।
জাকির হোসেন সৈকত 
