রাসেল ভাইপার সাপে কাটা এক রোগীর তথ্য নিতে ও বক্তব্য ভিডিও করতে গেলে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন ফটো সাংবাদিককে আটকে রেখে নাজেহাল করা হয়েছে ।
এ ঘটনায় অবিলম্বে ওই হাসপাতালের পরিচালক হুমায়ুন কবিরকে প্রত্যাহারের দাবী জানিয়েছে ফরিদপুর প্রেসক্লাব। শনিবার (৬ জুলাই) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে হাসপাতালের পুরাতন ভবনের দোতলায় অবস্থিত পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডে। ওই সময় থেকে বিকেলে সাড়ে ৩টা পযন্ত ওই ফটো সাংবাদিককে আটকে রাখা হয়। পরে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার পুলিশ ওই ফটো সাংবাদিককে উদ্ধার করে।
ওই ফটো সাংবাদিকের নাম শেখ নয়ন (৩১)। তিনি ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ফরিদপুর প্রতিনিধি এসএম মাসুদুর রহমানের ক্যামেরা পার্সন। শনিবার দুপুর দুইটার দিকে শেখ নয়ন হাসপাতালটির পুরনো ভবনের দোতলায় রাসেল ভাইপার সাপে কাটা রোগীর ভিডিও করতে গেলে তাকে বাধা দেন কর্মরত আনসার সদস্য সুব্রত দাস ।আনসার সদস্য সুব্রত দাস শেখ নয়নকে ছবি তুলতে বাধা দেন এবং তার ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে শেখ নয়নকে ওই ভবনের নিচ তলায় আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা আসাদুল্লাহ সুমনের কক্ষে নিয়ে আটকে রাখা হয়।
দুপুর ২টা ৫০ দিকে এই প্রতিবেদক ওই হাসপাতালের পরিচালক মো. হুমায়ুন কবিরকে ফোন দিয়ে কেন নয়নকে আটকে রাখা হয়েছে তা জানতে চান। উত্তরে পরিচালক জানান, হাসপাতালের ভেতরে যে কোন ছবি নিতে প্রতিষ্ঠান প্রধানের অনুমতি প্রয়োজন হয়, সে সেই অনুমতি নেয়নি। সংরক্ষিত এলাকা ছাড়া ছবি নিতে অনুমতি প্রয়োজন হয় কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের নিষেধ আছে। পরিচালক তখন সমকালের সাথে দুর্ব্যবহার করেন।
প্রায় এক ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পর বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে খবর পেয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহরিয়ার হাসপাতালে গিয়ে শেখ নয়নকে উদ্ধার করেন।শেখ নয়ন জানান, চরভদ্রাসন উপজেলায় রাসেল ভাইপার সাপে কাটা একজন রোগীর ছবি ও তথ্য সংগ্রহের হাসপাতালের পুরাতন ভবনের দোতালায় সার্জারি ওয়ার্ডে গিয়েছিলেন তিনি । সেখানে ছবি তোলা ও তথ্য সংগ্রহের সময় তার সাথে দুর্ব্যবহার করেন আনসার সদস্যরা। পারে তাকে আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তার কক্ষে নিয়ে বসিয়ে রাখা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
বিষয়টি ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহাসান তালুকদারকেও অবহিত করা হয়েছে। তিনি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে ফরিদপুরের কর্মরত সাংবাদিকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল ইসলাম পিকুল জানান, শনিবার সন্ধায় প্রেসক্লাবে বিষয়টি নিয়ে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। হাসপাতালে সংঘটিত ঘটনার সুস্ঠু তদন্তসহ বিচার এবং হাসপাতাল পরিচালকের বেপরোয়া আচরণের বিষয়ে আলোচনা করা হয়। সভা থেকে অবিলম্বে ওই হাসপাতালের পরিচালক মো. হুমায়ুন কবিরকে প্রত্যাহারের দাবী জানানো হয়।