বিএনপির কালো পতাকা মিছিলে নজরুল ইসলাম খান

মোঃ ইসমাইল ইমন প্রকাশিত: ২৮ জানুয়ারী , ২০২৪ ০৬:২৭ আপডেট: ২৮ জানুয়ারী , ২০২৪ ০৬:২৭ এএম
বিএনপির কালো পতাকা মিছিলে নজরুল ইসলাম খান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, আগে বলা হতো বিনা ভোটের সরকার। কারণ ৩শ আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনে কোনো প্রার্থী ছিল না। ২০১৮ সালে হলো নিশি রাতের নির্বাচন। কারণ রাত্রিবেলা ব্যালট বাক্স ভর্তি করেছে। আর এবার সরকারকে সারা দুনিয়া বলছে, এটা ডামি সরকার। কেউ বলে, আমি, ডামি ও স্বামী। স্বামী বলে কেন বলে জানেন তো। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলছিল, আমাদের দেশের সাথে ভারতের সঙ্গে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক। ডামি সরকার কী আসল সরকার হয়? এই সরকার টিকতে পারে না। এই সরকারের টিকা উচিত নয়। কারণ এই সরকারকে জনগণ ভোট দেয়নি। তাই আমি ডামি ও স্বামীর সংসদ বাতিল করতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, আগে বলা হতো বিনা ভোটের সরকার। কারণ ৩শ আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনে কোনো প্রার্থী ছিল না। ২০১৮ সালে হলো নিশি রাতের নির্বাচন। কারণ রাত্রিবেলা ব্যালট বাক্স ভর্তি করেছে। আর এবার সরকারকে সারা দুনিয়া বলছে, এটা ডামি সরকার। কেউ বলে, আমি, ডামি ও স্বামী। স্বামী বলে কেন বলে জানেন তো। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলছিল, আমাদের দেশের সাথে ভারতের সঙ্গে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক। ডামি সরকার কী আসল সরকার হয়? এই সরকার টিকতে পারে না। এই সরকারের টিকা উচিত নয়। কারণ এই সরকারকে জনগণ ভোট দেয়নি। তাই আমি ডামি ও স্বামীর সংসদ বাতিল করতে হবে। 

তিনি শনিবার (২৭ জানুয়ারী) বিকেলে কাজীর দেউরী নুর আহমদ সড়কে বিএনপির কালো পতাকা মিছিল পূর্ববর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতি, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি ও অবৈধ সংসদ বাতিলের এক দফা দাবীতে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি যৌথভাবে কেন্দ্র ঘোষিত এই কর্মসূচীর আয়োজন করে। 

নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে বিএনপির নেতাকর্মীরা মুখে কালো কাপড় বেধে, হাতে কালো পতাকা নিয়ে নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু করে লাভ লেইন, এনায়েত বাজার, জুবলী রোড় হয়ে তিন পুলের মাথায় গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে মিছিল শেষ করে। 

মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহবায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দিন মজুমদার, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া, ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। 

নজরুল ইসলাম খান বলেন, এই তথাকথিত নির্বাচনী খেলার আগে অল্প কিছুদিনের মধ্যে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের অন্তত ১৫শর বেশি নেতাকর্মীকে সাজা দেওয়া হয়েছে। অন্যায়ভাবে তাদেরকে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। আইনমন্ত্রী বলেন, এটা নাকি কাকতালীয়। ওনারা ইচ্ছে করে করেন নাই। এতোদিন হয় না সাজা, ঠিক নির্বাচনের আগে দিয়ে রাতে পর্যন্ত আদালত বসিয়ে শত শত নেতাকর্মীদের সাজা দেওয়া হয়েছে। এটি কাকতালীয় মনে হয় আপনাদের? এটি আমাদেরকে ভয় দেখানোর জন্য করা হয়েছে। আমরা ভয় পাইনি। ওঠাতো ছোট জেল, এই সরকার গোটা বাংলাদেশকে কারাগার বানিয়ে রেখেছে। বিএনপির কোনো কর্মী ওই ছোট কারগারকে ভয় পায় না।

তিনি বলেন, নির্বাচনের দিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার বেলা পাঁচটায় সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ভোট পড়েছে ২৮ শতাংশ। পাশে থেকে একজন বললেন, না স্যার ৪০ শতাংশ। পরে তিনি বললেন, ৪০ শতাংশ। প্রতিনিধিরা জিজ্ঞেস করলেন, আপনি একবার বললেন ২৮ আবার বললেন ৪০, ব্যাপারটা কী? তখন বলেন যে আমিতো ২টার দিকে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, বুঝতে পারি নাই, পরে সহকর্মীরা মনে করিয়ে দিয়েছে। ভাবেন একবার, দেশে একটা জাতীয় নির্বাচন হচ্ছে আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঘুমাচ্ছে। এটা স্বাভাবিক। ফলাফল তো ঠিক করাই আছে, কত কেন্দ্রে কে কত ভোট পাবে, বিরোধীদল নির্বাচন করে নাই, নির্বাচন কমিশনার ঘুমাইতে পারে।

তিন বলেন, ভোট ডাকাত আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে জনগণের কোন মূল্য নেই। তাই তারা জনগণের স্বার্থের কথা চিন্তা করছে না। নিজেদের আখের গোছানোর জন্য সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি করে জনগণকে বিভীষিকাময় পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। সাধারণ মানুষ আজ পরিবার পরিজন নিয়ে দিশেহারা। জনগণের কোন মূল্য আওয়ামী লীগের কাছে নেই, কারণ তারা ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় এসেছে।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার দাবি যেন আদায় করতে না পারি তার জন্য আজকে মিথ্যা বানোয়াট একটি মামলায় আপোষহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দীর্ঘদিন ধরে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। কারণ আওয়ামী লীগ জানে, বেগম খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তার কাছে তাদের অন্যায় অত্যাচার টিকবে না। কারণ জিয়া পরিবারের জনপ্রিয়তাকে তারা ভয় পায়।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এই অনির্বাচিত সরকার ১৪ সালে একতরফা নির্বাচন, ১৮ সালে দিনের ভোট রাতে আর ২৪ সালে প্রহসনের ডামি নির্বাচন করেছে। দেশের ৯৫ ভাগ মানুষ এই ভোট বর্জন করেছে। এই নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষ মানে না। তাই বর্তমান অবৈধ সংসদ বাতিল করতে হবে।জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য বিএনপি তারেক রহমানের নেতৃত্বে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে আন্দোলন করছে। উন্নয়নের নামে দুর্নীতি আর দুর্বৃত্তায়নের হোতা আওয়ামীলীগের কবল থেকে দেশ মুক্ত করে জনগণের লুণ্ঠিত ভোটের অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন চলবে।

সভাপতির বক্তব্যে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ৭ জানুয়ারীর নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে যায়নি, শিশুরা ভোট দিয়েছে। আগের নির্বাচনে কুকুর দেখা গিয়েছিল, এবারের নির্বাচনে বানর দেখা গেছে। ঐ যে বানরের পিটা ভাগাভাগি নির্বাচন। পিঠার ভাগ নেওয়ার জন্য বানর কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছিল। আওয়ামী লীগের এই নির্বাচন ৯৫ ভাগ মানুষ বয়কট করেছে। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ৬০ সেকেন্ডে ৬০ টি ভোট দিয়ে বিশ্ব রেকর্ড করেছে। তাই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে পারবেনা। তারেক রহমানের নেতৃত্বে রাজপথে আছি, আন্দোলন চলতে থাকবে। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মির্জা আব্বাস ও আসলাম চৌধুরীকে মুক্ত করে আনবো। 

আবুল হাশেম বক্কর বলেন, ৭ জানুয়ারীর নির্বাচনে প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা বাইরের দেশের এজেন্ট হয়ে রাতের অন্ধকারে জিমনেসিয়াম ও থানায় বসে ব্যালট বাক্স ভর্তি করেছে। ভোট ডাকাতি করে গণতন্ত্রকে কবর দিয়েছেন, এর জবাব দিতে হবে। আন্দোলন চলবে, হয়তো একটু সময় লাগছে। কিন্তু বিদায় নিতে হবেই।  

জালাল উদ্দীন মজুমদার বলেন, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার পর থেকেই একটা অত্যাচারী রাজনৈতিক দল হয়ে ওঠেছে। তারা সিন্ডিকেট করে সব কিছুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতারণার ডামি নির্বাচনের পরেই সরকার নতুন কারসাজি করে শেয়ার বাজারে ধ্বস নামিয়েছে। 

আবু সুফিয়ান বলেন, পাঁচ ভাগ মানুষের ভোট নিয়ে এই সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। আওয়ামীলীগের এই স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে। আন্দোলনের মাধ্যমে অচিরেই বিদায় নিতে হবে। মানুষের সম্পদ চুরি করে বাইরে নেওয়ার হিসাব আগামী দিনে অবশ্যই দিতে হবে।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উত্তর জেলা বিএনপি'র সি. যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ হালিম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সি. যুগ্ম আহবায়ক এনামুল হক এনাম, 
মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, এড. আবদুস সাত্তার, এস এম সাইফুল আলম, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, মো. শাহ আলম, ইসকান্দর মির্জা, আবদুল মান্নান, উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপক ইউনুস চৌধুরী, নুরুল আমিন, আলহাজ্ব সালাউদ্দীন, নূর মোহাম্মদ, নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন, সরওয়ার আলমগীর, কাজী সালাউদ্দিন, আহবায়ক কমিটির সদস্য মোশারফ হোসেন, হারুন জামান, কর্নেল আজিম উল্লাহ বাহার, জসিম উদ্দিন শিকদার, মাহবুব আলম, নিয়াজ মো. খান, এস এম আবুল ফয়েজ, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, জাহাঙ্গীর আলম দুলাল, আনোয়ার হোসেন লিপু, মন্জুর আলম চৌধুরী মন্জু, মো. কামরুল ইসলাম, এড. আবু তাহের, অধ্যাপক জসিম উদ্দিন চৌধুরী, অধ্যাপক কুতুব উদ্দিন বাহার, সেলিম চেয়ারম্যান, এড. ফোরকান, এম মঞ্জুর উদ্দিন চৌধুরী, কামরুল ইসলাম হোসাইনী, এস এম মামুন মিয়া, মজিবুর রহমান, এড. নূরুল ইসলাম, এড. ফৌজুল আমিন, খোরশেদ আলম, মফজল আহমদ চৌধুরী, নুরুল ইসলাম সওদাগর, ভিপি মোজাম্মেল, মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী জাহেদ, হুমায়ুন কবির আনসার, হাজী মোহাম্মদ রফিক, ইসহাক চৌধুরী, হামিদুল হক মান্নান চেয়ারম্যান, এহসানুল মাওলা, নূরুল কবির, মঈনুল আলম ছোটন, শফিকুল ইসলাম, সাজ্জাদ হোসেন, এড. কাশেম চৌধুরী, মহানগর যুবদলের সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ, বিভাগীয় শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক শেখ নুরুল্লাহ বাহার, মহানগর মহিলাদলের সভাপতি মনোয়ারা বেগম মনি, ছাত্রদলের সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিন, উত্তর জেলা মহিলা দলের সভাপতি নার্গিস আক্তার, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সরোয়ার উদ্দিন সেলিম, ছাত্রদলের সদস্য সচিব মনিরুল আলম জনি, দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মনজুর আলম তালুকদার, সদস্য সচিব জমির উদ্দিন চৌধুরী, ছাত্রদলের আহ্বায়ক রবিউল হোসেন রবি, সদস্য সচিব কামরুদ্দিন সবুজ প্রমুখ।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo