মালয়েশিয়ার তিন দিকেই সমুদ্র। মাটি আর সমুদ্রের মিতালী মালয়েশিয়ার মসজিদগুলোকেও এক অনন্য বৈশিষ্ট্য দান করেছে। দেশটির বিভিন্ন শহরে এমন কয়েকটি পানিবেষ্টিত মসজিদ রয়েছে যা দেখলে ভাসমান মনে হয়।
ক্রিস্টাল মসজিদ
মূল্যবান ক্রিস্টাল আর সঙ্গে স্বচ্ছ কাচ ও স্টিলের দণ্ড দিয়ে বানানো হয়েছে মালয়েশিয়ার ক্রিস্টাল মসজিদ। স্বচ্ছতার কারণেই এই মসজিদের এমন নামকরণ। মুসলিম স্থাপত্যের অপূর্ব এই নিদর্শনটি দাঁড়িয়ে আছে মালয়েশিয়ার তেরেনগানু এলাকার ‘পোলা ও ওয়ান ম্যান’ দ্বীপে। প্রাকৃতিক শোভা ও মননশীল নির্মাণশৈলীর অভূতপূর্ব সমন্বয়ে তৈরি এই মসজিদ শুধু মালয়েশিয়ায় নয়, পুরো বিশ্বের কাছে অতি আশ্চর্য ও মনোমুগ্ধকর একটি স্থাপনা। খাঁটি ক্রিস্টাল দিয়ে নির্মিত মসজিদটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম মসজিদ। ক্রিস্টাল মসজিদ পরিদর্শনের জন্য প্রতিদিন দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য পর্যটকের আগমন ঘটে।
দিনের বেলা মসজিদের সৌন্দর্য দেখতে যতটা সুন্দর লাগে, রাতের বেলা সৌন্দর্য যেন বেড়ে যায় আরও কয়েকগুণ। মসজিদটির কিছু অংশ সমুদ্রে আর কিছু অংশ স্থলে হওয়ায় আশপাশে সৃষ্টি হয়েছে এক নৈসর্গিক পরিবেশের। পানির মাঝে অবস্থান হওয়ায় মসজিদের চারপাশ বেশ খোলামেলা। চারপাশে এই খোলা জায়গার জন্য বিকেলের দিকে যখন ক্রিস্টাল মসজিদে সূর্যের আলো পড়ে তখন প্রতিটি কাচে এর আলো প্রতিফলিত হয়। রাতে মসজিদের রঙিন আলো যখন পানিতে পড়ে তখন সে দৃশ্যের বর্ণনা যেন অপরূপ অন্য সকল স্থাপনাকেও হার মানায়। কংক্রিট আর কাচ দিয়ে বানানো বলে মসজিদের ভেতরে আরামদায়ক তাপমাত্রা বজায় থাকে। ক্রিস্টালের তৈরি বলে মসজিদের ভেতরের দৃশ্য বাহির থেকে দেখা যায়। এই মসজিদের চারপাশে চারটি মিনার আছে। মিনারগুলোও নির্মিত হয়েছে স্বচ্ছ ক্রিস্টাল দ্বারা। মসজিদের ভেতরে রয়েছে তারবিহীন উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্রডব্যান্ড সংযোগ। ফলে মুহূর্তে ইমাম সাহেবের ওয়াজ ও খুতবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে।
২০০৬ সালে মালয়েশিয়ার রাজা এই মসজিদ নির্মাণের আদেশ দেন। ২০০৮ সালে মুসল্লিদের নামাজের জন্য মসজিদটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। মসজিদে একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারেন ১৫০০ মুসল্লি। মালয়েশিয়ার ক্রিস্টাল মসজিদ ঐতিহ্যগত ইসলামিক স্থাপত্য ও আধুনিকতার বৈশিষ্ট্য নিয়েই নির্মিত।
পেনাং মসজিদ
মালয়েশিয়ার পেনাংয়ে অবস্থিত ভাসমান আরেকটি মসজিদের নাম পেনাং মসজিদ। এই মসজিদের আরেক নাম তানজুং বুনগাহ ভাসমান মসজিদ। এটি মালয়েশিয়ার প্রথম ভাসমান মসজিদ। একে ভাসমান বলা হলেও মসজিদটি আসলে কাঠের ওপর নির্মিত। জোয়ার এলে এই মসজিদকে পানিতে ভাসমান মনে হয়। মধ্যপ্রাচ্য এবং আধুনিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে নির্মিত হয়েছে মসজিদটির মিনার। মসজিদে একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারেন ১৫০০ মুসল্লি। মসজিদটি শুরুতে এত বড় ছিল না। ১৯৬৭ সালে এই এলাকায় একটি ছোট মসজিদ নির্মাণ করা হয়। ১৯৭৭ সালে জায়গা বড় করে ৫০০ মুসল্লির নামাজ পড়ার মতো ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু ধীরে ধীরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মুসল্লিদের নামাজের জায়গাও কমতে থাকে। মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে মসজিদে সব মুসল্লিকে জায়গা দেওয়াও কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। তখনই পানির মাঝে এই মসজিদ নির্মাণের প্রস্তাব আনা হয়। ২০০৩ সালে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়। মসজিদ নির্মাণে ব্যয় হয় ১৫ মিলিয়ন রিঙ্গিত। ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে এটি মুসল্লিদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
কোটা কিনাবালু সিটি মসজিদ
বোর্নিও দ্বীপে পূর্ব মালয়েশিয়ার সাবাহ প্রদেশের রাজধানী কোটা কিনাবালুতে অবস্থিত দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম মসজিদ ‘কোটা কিনাবালু সিটি মসজিদ’। নীল এবং সোনালি রঙের গম্বুজ দিয়ে নির্মিত এই মসজিদটি ভ্রমণপিপাসুসহ অনেক দর্শনার্থীর আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। সিটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে সৌদি আরবের মদিনায় অবস্থিত মসজিদে নববীর আদলে। আধুনিক ডিজাইনে নির্মিত এই মসজিদের আকর্ষণ অন্যান্য অনেক মসজিদ থেকে বেশি। ২০০০ সালে এর নির্মাণকাজ শেষ হয়। ১৯৮৯ সালে মসজিদের নির্মাণকাজ শুরুর প্রস্তুতি নেওয়া হলেও ভিত্তি গড়া হয় ১৯৯২ সালে। ’৯৩ এবং ’৯৪ সালে তহবিলের অভাবের কারণে নির্মাণকাজ কিছুটা পিছিয়ে পড়ে। মালয়েশিয়ান মুদ্রা রিঙ্গিতের হিসেবে এর জন্য ব্যয় হয়েছে ৩৪ মিলিয়ন রিঙ্গিত। মসজিদটির চারপাশ কৃত্রিম হ্রদ দিয়ে ঘেরা। দেখে মনে যেন হ্রদের মাঝে একখ- ভূমির মতো ভেসে আছে মসজিদটি। হ্রদের পানিতে চাইলে দর্শনার্থীরা নৌকায় চড়ে ঘুরতে পারেন, ছবি তুলতে পারেন। দিনের বেলা এই পানিতে মসজিদের প্রতিবিম্ব পড়ে, রাতে চাঁদের আলোতে সেই দৃশ্য যেন আরও মোহনীয় হয়ে ওঠে।
সিটি মসজিদের অবস্থান দক্ষিণ চীন সাগরের লাইকাস বে উপকূলে পাসির রোডে। সাগরের পানির গর্জনকে পেছনে ফেলে কোটা কিনাবালু-ওয়ান বোর্নিও রোডে শাঁই শাঁই গাড়ি ছুটে চলে। পথচারীরা হেঁটে যান গাছের সঙ্গে মিলিয়ে সবুজ রং করা হাঁটাপথ ধরে। কেউ যদি মসজিদের সৌন্দর্য কিছুটা দূর থেকে বসে উপভোগ করতে চান তবে এই সাগর পাড়ে বসে অনেকক্ষণ সময় নিয়ে তা দেখা যায়। অনেকটা অর্ধবৃত্তাকারে শুয়ে থাকা সাগরের ওই অংশটার নাম লিকাস বে। এ জায়গাটার নামও লিকাস। রাজধানী কোটা কিনাবালু থেকে এখানে আসতে মিনিট পনেরোর বেশি সময় লাগবে না।
এক সঙ্গে ১২ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন এখানে। এই মসজিদ কমপ্লেক্সে ৩টি মাদ্রাসার কার্যক্রম চলে। শুধু বাইরে থেকেই নয়, মসজিদের ভেতরেও খুব সুন্দর করে সাজানো-গোছানো সবকিছু। মূল কম্পাউন্ডে আছে তথ্যকেন্দ্র আর ফাস্টফুড কর্নার। মসজিদে প্রবেশমুখে আরও আছে বিনে পয়সায় পানি পানের অটো মেশিন, ব্যাংকের এটিএম বুথ। গোটা কয়েক মেসেজ চেয়ার আর বিপরীতে আতর সুরমার পসরা সাজিয়ে রাখা। আছে কোরআন শরিফ ও কোরআনদানিসহ বিভিন্ন ধর্মীয় পুস্তক। নানা আকারের খেজুরের প্যাকেটও আছে একপাশে। আছে মিসওয়াক, দাঁতের খিলান। মাঝে মাঝে গোলাকার স্তম্ভ ঘিরে গড়া বৃত্তাকার র্যাকে কোরআনসহ ধর্মীয় পুস্তক সাজিয়ে রাখা। মিহরাব আর মিম্বরে নকশাখচিত কারুকাজ। সামনের মূল অংশটার ওপরে একটাই গম্বুজ। তার নিচে সুদৃশ্য প্যানেল। পেছনের লাগোয়া ছাদের চার কোনায় চারটি মিনার। দূর থেকে মনে হয় গম্বুজটাকে ঘিরে রেখেছে মিনারগুলো। ঘরের ভেতরে ঘর, তার ভেতরে ঘর স্টাইলে মসজিদের মূল ভবন গড়া। তাই একের পর এক দরজা পেরিয়ে এগিয়ে যেতে হয় সামনে। প্রতি দরজার দু’পাশে এলসিডি মনিটর। তাতে খুৎবা আর বয়ান প্রচারের ব্যবস্থা। শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত মসজিদটি দর্শনার্থীদের জন্য খোলা রাখা হয়। মসজিদে প্রবেশের আগে পর্যটকদের গেটে রেজিস্টার খাতায় নাম এন্ট্রি করতে হয় এবং তাদের পরিহিত পোশাক নজরে রাখা হয়। পুরো শরীর পোশাকে আবৃত করলেই কেবল মসজিদে প্রবেশের অনুমতি মেলে। ২০১৫ এবং ২০১৮ সালে বিদেশি পর্যটকদের নিয়ে মসজিদের সামনে কিছু বিড়ম্বনার সৃষ্টি হওয়ার কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পুত্রা মসজিদ
দারুণ নির্মাণশৈলী নিয়ে নির্মিত মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের পুত্রা মসজিদ। ভেতর বাইরে সর্বত্র অপরূপ সৌন্দর্যমণ্ডিত এ মসজিদ মুগ্ধ করবে যে কাউকে। মসজিদের সৌন্দর্য এক বা দুইটি ছবি দিয়ে প্রকাশ করা যায় না। পটে আঁকা ছবির মতো সাজানো এই মসজিদটির নাম বরাবর উঠে আসে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর মসজিদের তালিকায় ওপরের দিকে। নির্মাণগত দিক দিয়ে মসজিদটি যেমন সুন্দর তেমনি একে আলাদা সৌন্দর্য দান করেছে এর অবস্থানগত কারণ। মসজিদটি কুয়ালালামপুরের পুত্রাজায়া লেকের মধ্যে অবস্থিত। প্রবেশপ্রান্ত স্থলভাগের সঙ্গে যুক্ত। মসজিদটির কয়েক গজ দূরে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন পারাদানা পুত্রা। স্বাভাবিকভাবেই এর চারদিকে অপরূপ শোভামণ্ডিত। মসজিদের সামনে বিশাল গোলচত্বরটিও পুত্রাজায়া লেকবেষ্টিত। লেকটি মানবসৃষ্ট। পুত্রাজায়ার প্রধান মসজিদ এটি। মসজিদের গম্বুজ হালকা হালকা গোলাপি গ্রানাইট পাথর দিয়ে নির্মিত। হালকা লাল গম্বুজ, হালকা গোলাপি রঙের গ্রানাইট পাথর আর সুন্দর কারুকাজ মসজিদটিকে করেছে দৃষ্টিনন্দন। এর নির্মাণকাজ শুরু ১৯৯৭ সালে। দুই বছরের মাথায় নির্মাণ সম্পন্ন হয়। মসজিদে একত্রে ১৫ হাজার মুসল্লির নামাজ আদায় করার ব্যবস্থা আছে। মসজিদের মূল অংশে রয়েছে নামাজের জায়গা, আঙিনা এবং শিক্ষামূলক কার্যক্রমের জন্য কয়েকটি কক্ষ। নামাজের স্থানে রয়েছে মোট ১২টি বিশালাকায় খুঁটি। ২৫০ ফুট উঁচু প্রধান গম্বুজটি অবস্থিত মসজিদের মাঝখানে। গম্বুজের ব্যাসার্ধ ১১৮ ফুট। মসজিদের বিভিন্ন রুমে কনফারেন্স, সিম্পোজিয়াম ও সেমিনার আয়োজনের ব্যবস্থা রয়েছে। একসঙ্গে পাঁচ হাজার লোক আঙিনায় জড়ো হয়ে বসতে পারেন। ৩৮০ ফুট উঁচু মিনারটি বাগদাদের শেখ ওমর মসজিদের আদলে নির্মিত। এই মিনারটি দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ মিনার। পৃথিবীর অন্যতম আধুনিক মসজিদ গণ্য করা হয় পুত্রা মসজিদকে। মসজিদের সামনে সুসজ্জিত ফুলের বাগান, বৃক্ষরাজি সহজেই মুগ্ধ করে দর্শকদের। পুত্রাজায়ার নামকরণ করা হয়েছে মালয়েশিয়ার প্রথম প্রধানমন্ত্রী টুঙ্কু আবদুর রহমান পুত্রা’র নামানুসারে। পুত্রার সঙ্গে যোগ করা হয়েছে ‘জায়া’, যার অর্থ হলো ‘উৎকৃষ্টতা’।
সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মসজিদটি সবার জন্য উন্মুক্ত। নামাজের সময় মুসলমান বাদে অন্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য প্রবেশের ক্ষেত্রে অনুৎসাহিত করা হয়। তবে দর্শনার্থী মহিলাদের জন্য গেইটের পাশে লকারে এপ্রোন ও হিজাব রয়েছে। মসজিদে প্রায়শই দেখা মেলে মালয়েশিয়ানদের জাতীয় পোশাক পরিহিত মুসল্লিদের। পুরুষরা বাজু মালায়ুর ওপর পেটের সামনে এবং পেছনে ঝকমকে সামপিং আর মাথায় সংকু (টুপি) ব্যবহার করে। তাদের এ পোশাক দেখতে রাজকীয় পোশাকের মতোই লাগে। মহিলারা বাজু কুরুং-এর উপায়ে টুডোং পরে। এটা তাদের ঐতিহ্যগত পোশাক।
মসজিদ সালাহ মালাকা
মালাক্কা প্রণালী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মালয় উপদ্বীপ এবং ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের মধ্যে অবস্থিত একটি সংকীর্ণ সমুদ্রপ্রণালী। অনেকেই বলেন, মালয়েশিয়ার বিচিত্র বর্ণময় ইতিহাসের একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে মালাক্কা। আর মালয়েশিয়ায় ইসলামের প্রচার এবং প্রসারও ঘটেছে মালাক্কাকে দিয়েই। মালাক্কা মালয়েশিয়ার তৃতীয় ক্ষুদ্রতম একটি রাজ্য এবং ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত। তাই মালাক্কাকে বলা হয় মালয়েশিয়ার ইতিহাসের শহর। ঐতিহ্যবাহী এই শহরের আসল নাম মেলাকা হলেও সবাই একে মালাক্কা নামেই চেনে। কুয়ালালামপুর থেকে মালাক্কা ২ ঘণ্টা যাত্রাপথ। এই মালাক্কারই বিখ্যাত স্থাপনার নাম ‘মসজিদ সালাহ মালাকা’। মসজিদটি সমুদ্রপাড়ে অবস্থিত হওয়ায় দূর থেকে দেখলে মনে হয় এটি পানিতে ভাসছে। তাই একেও একটি ভাসমান মসজিদ বলতেই হয়।
মসজিদের নির্মাণ করা হয়েছে প্রাচীন স্থাপত্যের নকশার অনুকরণে। ২০০৬ সালের ২৪ নভেম্বর মসজিদটি মুসল্লিদের নামাজের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এছাড়াও এর সৌন্দর্য দেখতে বিপুল পর্যটকের দেখা মেলে মসজিদ সংলগ্ন বিশাল উঁচু মিনার, সুপরিসর বাগান, পার্কিং ও সামনের খোলা জায়গাজুড়ে। সুসজ্জিত মসজিদে নারীদের আলাদা নামাজ পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। মসজিদের অভ্যন্তরের বিশাল কাঠের মিম্বর ও বড় সাইজের সিলিং ফ্যান অন্যতম একটি বিশেষত্ব। মসজিদে রয়েছে শিশুদের আনন্দের সঙ্গে কোরআন শেখানোর ব্যবস্থা। আগ্রহ সৃষ্টির জন্য আলাদা স্থানে, আরবি হরফগুলোকে বিভিন্ন ছবি ও নকশার মাধ্যমে শেখানো হয়। আছে অতিথিদের জন্য শরবত ও ঠাণ্ডা পানি পানের সুব্যবস্থা। মসজিদের পাশে বিয়েসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য রয়েছে বিশাল হলরুম। রয়েছে মসজিদের নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্স ও দাফন-কাফনের ব্যবস্থা। জুতা চুরির আশঙ্কা নেই বিধায় জুতার স্ট্যান্ড মসজিদের বাইরে রাখা।
দ্বিতল মসজিদের মূল ভবনে রয়েছে বিশাল আকৃতির একটি গম্বুজ। মসজিদের চারপাশের দরজাগুলো খোলা। মসজিদের দক্ষিণ পাশে সাগরের ওপর বিশাল এলাকাজুড়ে জেটির মতো মাচা নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে সাগরের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য। এখানে দাঁড়িয়ে দেখা যায় দৃষ্টিসীমাজুড়ে শুধু পানি আর পানি। মসজিদ ছাড়াও মালাক্কায় পায়ে-হাঁটা দূরত্বের মধ্যে ঘুরে দেখার জন্য বেশ কিছু ঐতিহাসিক ও আকর্ষণীয় জায়গা রয়েছে। এসব জায়গার অন্যতম হলো মালাক্কা সুলতানের বাড়ি, হেরিটেজ মিউজিয়াম, সেন্ট পল চার্চ, মালাক্কা ডাচ স্কয়ার, স্কাই টাওয়ার, মালয়েশিয়া মুসলিম মিউজিয়াম, স্থাপত্য মিউজিয়াম ও মসজিদে ট্রানকুরাহ ইত্যাদি।