অধ্যক্ষ অনুপস্থিত থাকায় বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জ্যেষ্ঠ শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়েছে যশোর বোর্ড। গত ৫ আগস্ট দেশের পট পরিবর্তনের পর থেকে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত অধ্যক্ষদের অনেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসছেন না।
এক্ষেত্রে অ্যাকাডেমিকসহ প্রশাসনিক অন্যান্য কাজ সচল রাখতে এমনটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক সমীর কুমার কুন্ডু।সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যশোর সদর উপজেলার ইছালী মডেল কলেজের অধ্যক্ষ নুরে আলম সিদ্দিকী মিলন গত ৫ আগস্টের পর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত। তিনি জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
তিনি অনুপস্থিত থাকায় কলেজের একাডেমিকসহ বিভিন্ন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।এ কারণে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে কাউকে দায়িত্ব দিতে জ্যেষ্ঠ শিক্ষকেরা শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করেন। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বোর্ড কর্তৃপক্ষ কলেজের সিনিয়র শিক্ষক এসএম শরিফ আহমেদকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়েছে।সাতক্ষীরার আশাশুনি বড়দল আফতার উদ্দীন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সিনিয়র শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীকে।
এর আগে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকা বাবলুর রহমান ৫ আগস্টের পর থেকে কলেজে অনুপস্থিত। শিক্ষকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মোহাম্মদ আলীকে এ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।কিন্তু মোহাম্মদ আলী জানিয়েছেন, বোর্ড থেকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হলেও তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়নি। আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কৃষ্ণা রায় জানান, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদ নিয়ে মামলা চলছে। আদালতের রায়ের পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে কে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে থাকবেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় থেকে কুষ্টিয়ার মাসউদ রুমী ডিগ্রি কলেজে কানিজ ফাতেমা ও আঞ্জুম নাহার পর্যায়ক্রমে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। চৌধুরী নুরুদ্দীন সেলিম অধ্যক্ষ হলেও তাকে দায়িত্ব পালন করতে দেয়া হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চৌধুরী নুরুদ্দীন সেলিম অধ্যক্ষের দায়িত্ব ফিরে পান। তাকে এবার অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়েছে যশোর শিক্ষা বোর্ড।
যশোর বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক সমীর কুমার কুন্ডু জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ বেসরকারি মাধ্যমিক-৩ শাখার পরিপত্রে উল্লেখ রয়েছেÑ প্রতিষ্ঠান মাধ্যমিক বিদ্যালয় হলে সহকারী প্রধান শিক্ষক বা উপাধ্যক্ষ ব্যতীত অন্য কোনো শিক্ষককে প্রধান বা অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়া যাবে না। সহকারী প্রধান শিক্ষক বা উপাধ্যক্ষের পদ শূন্য থাকলে শিক্ষকদের মধ্য থেকে জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক বা জ্যেষ্ঠ সহকারী অধ্যাপককে প্রধান শিক্ষক বা অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিতে হবে।
তিনি জানান, প্রতিষ্ঠান উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় হলে সহকারী প্রধান শিক্ষককে (গ্রেড-৮) প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষককের দায়িত্ব দেয়া যাবে না। জ্যেষ্ঠ প্রভাষক বা সহকারী অধ্যাপকদের (গ্রেড-৬) মধ্য থেকে জ্যেষ্ঠ প্রভাষক বা সহকারী অধ্যাপককে অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিতে হবে। প্রতিষ্ঠান নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় বা উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ হলে জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক বা জ্যেষ্ঠ প্রভাষক বা সহকারী অধ্যাপককে অধ্যক্ষের দিতে হবে।