যশোর সদরের সুলতানপুরে ইজিবাইক চালক মফিজুর হত্যা মামলায় ৫ আসামিকে ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। সোমবার অতিরিক্ত দায়রা জজ ৩য় আদালতের বিচারক ফারজানা ইয়াসমিন এক রায়ে এ আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো, সদরের হামিদপুর বিশ্বাস পাড়ার মকছেদ আলী বিশ্বাসের ছেলে ইকতিয়ার বিশ্বাস, মণিরামপুরের লক্ষণপুর গ্রামের মৃত হাছিম সরদারের ছেলে যশোর সদরের মান্দারতলা এলাকার রহিমার বাড়ির ভাড়াটিয়া খোরশেদ আলম, ধানঘাটা গ্রামের বলরাম ঘোষের ছেলে গোপাল ঘোষ, হামিদপুর দক্ষিণপাড়ার জালাল উদ্দিনের ছেলে কাজল ও চানপাড়ার মফজেল বাড়ের এনামুল। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত গোপাল ঘোষ ও ইকতিয়ার পলাতক রয়েছে। অন্য মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এনামুল, খোরদেশ ও কাজল কারাগারে আটক আছে। । বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, মফিজুর ইজিবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। আসামিরা সবাই তার বন্ধু ও একসাথে চলাফেরা করতেন। গোপাল ঘোষ তার স্ত্রীকে নিয়ে বকচর হুসতলা এলাকায় ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন। মফিজুর বন্ধু গোপালের বাসায় মাঝে মধ্যে বেড়াতে যেতেন। ২০০৫ সালের ১৪ এপ্রিল রাতে গোপালের স্ত্রী তার বাসায় খুন হন। এ ঘটনায় গোপাল প্রথমে অপরিচিত ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় অভিযোগ দেন। পরে মফিজুরকে আসামি করে আদালত ও থানায় অভিযোগ করেন। মফিজুরকে পুলিশ আটক করে কারাগারে পাঠায়। মফিজুর জামিনে মুক্তি পেলে গোপাল তার স্ত্রী হত্যার প্রতিশোধ নিতে অপর আসামিদের সাথে এক লাখ টাকায় চুক্তি করেন।
মামলায় বলা হয়, ২০১১ সালের ২২ জুন প্রতিদিনের মতো মফিজুর ইজিবাক চালাতে বাড়ি থেকে শহরে যায়। রাতে সিটি কলেজ পাড়ার বৌবাজার এলাকার একটি গ্যারেজে ইজিবাইক চার্জে দিয়ে তার সহকারী নয়নকে সাথে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথিমধ্যে ইকতিয়ার পাওনা টাকা দেয়ার কথা বলে মফিজুরকে ফোন দেয়। মফিজুর ময়লাখানার সামনের ফুলতলা পাম্পের সামনে নেমে নয়নকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। এরপর মফিজুর আর বাড়ি ফেরেননি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ২৪ এপ্রিল ঝুমঝুমপুর ময়লাখানা সংলগ্ন একটি পুকুর থেকে মফিজুর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী আয়েশা বেগম অপরিচিত ব্যক্তিদের আসামি করে কোতয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্তকালে ইকতিয়ার ও খোরশেদকে আটক করে পুলিশ। দীর্ঘ তদন্ত শেষে আটক দুইজনের জবানবন্দি ও সাক্ষীদের বক্তব্যে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় ওই ৫ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১২ সালের ২৬ মার্চ আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন। দীর্ঘ সাক্ষীগ্রহণ শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক প্রত্যেককে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন।