আজ বিশ্ব নাকবা দিবস

সাকিব হোসেন প্রকাশিত: ১৬ মে , ২০২৪ ০৫:৪৫ আপডেট: ১৬ মে , ২০২৪ ০৫:৪৫ এএম
আজ বিশ্ব নাকবা দিবস
আজ ১৫ মে, নাকবা বা মহাবিপর্যয় দিবস। বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিনিরা আজকের দিনে নাকবা দিবস পালন করেন। ৭৬ বছর আগে ফিলিস্তিনেদের ওপর নেমে আসা মহাবিপর্যয় ও তাঁদের ঘর হারানোর দিন আজ। সেই দুঃসহ স্মৃতি আজও বয়ে বেড়াচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা।

আজ ১৫ মে, নাকবা বা মহাবিপর্যয় দিবস। বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিনিরা আজকের দিনে নাকবা দিবস পালন করেন। ৭৬ বছর আগে ফিলিস্তিনেদের ওপর নেমে আসা মহাবিপর্যয় ও তাঁদের ঘর হারানোর দিন আজ। সেই দুঃসহ স্মৃতি আজও বয়ে বেড়াচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা।

সেই নির্যাতন-দখলদারত্ব আজও তাড়া করছে তাদের।নাকবা দিবসের ইতিহাস জানতে আমাদের একটু পেছনে যেতে হবে। সময়টা ১৯৪৮ সালের ১৪ মে। ওই দিন বদলে যায় মধ্যপ্রাচ্যের মানচিত্র। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখল করে ইহুদিদের জন্য নতুন একটি রাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। আর এতে সহায়তা করে যুক্তরাজ্য। নতুন রাষ্ট্রটির নাম রাখা হয় ইসরায়েল। ইহুদিদের মতে, নতুন রাষ্ট্র গঠন করে তাঁরা ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত ভূমিতে ফিরে এসেছেন। এই ভূমি তাঁদের।


ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরদিন থেকেই স্থানীয় আরব অধিবাসীদের ওপর নেমে আসে মহাবিপর্যয় বা আল-নাকবা। ইহুদি সশস্ত্র গোষ্ঠী ও সেনারা ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য হত্যা-লুট-অগ্নিসংযোগ শুরু করেন। প্রাণভয়ে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি বাড়িঘর, সহায়-সম্পত্তি ছেড়ে পালাতে থাকেন। প্রায় সাড়ে সাত লাখ ফিলিস্তিনি জর্ডান, লেবানন ও সিরিয়ায় গিয়ে উদ্বাস্তু হিসেবে আশ্রয় নেন।

রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরপরই আরবদের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ান ইসরায়েলিরা। শুরু হয় আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ। দখল করে নেওয়া হয় ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের প্রায় ৭৮ শতাংশ। এর ফলে ভূমিপুত্র আরবদের বসবাস শুধু পশ্চিম তীর ও গাজায় সীমিত হয়ে যায়। এক অনিঃশেষ অনিশ্চয়তার মধ্যে পতিত হন ফিলিস্তিনিরা, যা আজও চলছে। এই কারণে ফিলিস্তিনিরা প্রতিবছর ১৫ মে নাকবা দিবস বা মহাবিপর্যয়ের দিন হিসেবে পালন করেন।

কিন্তু ২০২৪ সালে এসে বিশ্বসম্প্রদায়ের চোখের সামনে গাজায় যে বিপর্যয় ঘটে চলেছে, মহাবিপর্যয় বা নাকবা যেন সেটার তুলনায় অনেকটাই ফ্যাকাশে। নাকবার সময় ঘরবাড়ি ছেড়ে পালানো সাড়ে সাত লাখ ফিলিস্তিনিকে আর কখনোই নিজেদের ভূখণ্ডে ফিরতে দেওয়া হয়নি। এখন ১০ থেকে ১২ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণভয়ে গাজার এক প্রান্ত থেকে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু হিসেবে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। ফিলিস্তিনিরা মনে করছেন, নাকবার ইতিহাস যেন আরও ভয়াবহভাবে তাঁদের জীবনে ফিরে এসেছে। সাত মাস পেরিয়ে গেছে, গাজায় প্রতিদিনই ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা চলছে। প্রাণ গেছে ৩৫ হাজারের বেশি মানুষের। বেশির ভাগই নারী-শিশু। গাজার সড়কে এখন গাড়ি, গাধা, গাধায় টানা গাড়ির ভিড় লেগে আছে। সবাই ছুটছেন। কোথায় গেলে মাথা গোঁজা যাবে, একটু নিরাপত্তা পাওয়া যাবে, এই আশ্রয়ের প্রত্যাশায় সবাই।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo