চিঠি লিখে চা দোকানীর আত্নহত্যার ঘটনায় সুদেকারবারী গ্রেফতার

মোঃ রিয়াজুল করিম প্রকাশিত: ১ অক্টোবর , ২০২৩ ১০:৪৯ আপডেট: ১ অক্টোবর , ২০২৩ ১০:৪৯ এএম
চিঠি লিখে চা দোকানীর আত্নহত্যার ঘটনায় সুদেকারবারী গ্রেফতার
বিষয়টি তদন্ত করে এজাহার নামীয় আসামী তরিকুলকে আমরা গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। বাকি আসামিদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ঝিনাইদহের সদর উপজেলার হলিধানী ইউনিয়নে সুদখোরদের নির্যাতেন চিরকুট লিখে আত্নহত্যাকারী সিরাজুল ইসলাম সুরুজের স্ত্রীর দায়ের করা আলোচিত মামলার ছয় আসামীর অন্যতম আসামী সুদখোর তরিকুল ইসলাম পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডাকবাংলা বাজার থেকে মামলার অন্যতম আসামী তরিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে চিরকুট লিখে সুদখোরদের নির্যাতনে আত্নহত্যা করেন হলিধানী ইউনিয়নের সিরাজুল ইলসলাম সুরুজ নামে এক চা দোকনী। আত্নহনণকারী সিরাজুল ইসলাম সুরুজের স্ত্রী সফুরা খাতুন বাদী হয়ে থানায় আত্নহত্যার প্ররোচনার মামলা দায়ের করেন। মামলায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হাসনাহাটি গ্রামের শহর আলী মুন্সির ছেলে তরিকুল ইসলাম সহ সদর থানার হলিধানী ইউনিয়নের কুখ্যাত সুদখোর কোলা গ্রামের আবু বক্কর মাষ্টারের ছেলে ফারুক ডাক্তার, হলিধানী বাজারের লুৎফর রহমানের ছেলে আনিছুর রহমান আনিচ ও সোনারদাইড় গ্রামের সৈয়দ আলী মেম্বরের ছেলে মতিয়ার রহমান সহ ৬ জনকে আসামী করেন।

সফুরা খাতুন তার এজাহারে উল্লেখ করেন, তার স্বামী সুরুজের হলিধানী বাজারে কনফেকশনারীর দোকান আছে। ব্যবসাায়ীক প্রয়োজনে বিভিন্ন সময় উল্লেখিত আসামীদের কাছ থেকে টাকা ধার করে ব্যবসা বানিজ্য করতেন। ধারের এই টাকা পরিশোধও করে দেন। কিন্তু হঠাৎ একদিন আসামীরা জোটবদ্ধ হয়ে বাদীর বাড়িতে প্রবেশ করে তার ছেলে সাজেদুল ইসলাম শাকিলের হাতে একটি লিগ্যাল নোটিশ ধরিয়ে দেন। তখন আমার স্বামী ও ছেলে ধারের টাকা সম্পুর্ন পরিশোধ করার কথা জানালে আসামীরা আমার বাড়ির উঠানে দাড়িয়ে বিশ্রী ভাষায় গালিগালাজ করে। এতে আমার স্বামী সুরুজ মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে এবং গত ৮ সেপ্টম্বর বাড়ির দুই তলার ঘরে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করে।সফুরা খাতুনের অভিযোগ আমার স্বামীর আত্মহত্যার পেছনে আসামীদের প্রকাশ্যে হাত রয়েছে। তাদের প্ররোচনায় আমার স্বামী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। আত্মহত্যার সময় সুরুজের পকেটে পাওয়া চিরকুটে উল্লেখ ছিল “সুদখোরদের অত্যাচারে বাঁচতে পারলাম না, আমার জায়গা-জমি বাড়ি সব বিক্রি করে দিয়েছি। একেক জনের কাছ থেকে যে টাকা নেওয়া তার সাত আট দশগুণ পরিমাণ টাকা দিয়েও রেহাই দিলো না তারা।

কেউ কেস করেছে কেউ কেউ অপমান অপদস্ত করেছে আমি আর সহ্য করতে পারছিনা তাই বিদায় নিলাম। আমার জানাযা হবে কিনা জানিনা। যদি হয় োতখন সব সুদখোররা টাকা চাইতে এলে আমার শরীরটাকে কেটে ওদেরকে দিয়ে দিবেন। এই সুদখোরদের বিচার আল্লাহ করবে। সুদখোরদের নাম বললাম না কিন্তু তারা সবাই টাকার জন্য আসবে। তখন বুঝতে পারবেন তারা কারা আমি ক্ষমার অযোগ্য তবু ক্ষমা করেদিবেন”। এদিকে সুরুজ আত্মহত্যার পর থেকেই হলিধানী এলাকার চিহ্নিত সুদখোররা এলাকা ছেড়েছে বলে পুলিশ জানায়। ঝিনাইদহ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আবিদুর রহমান জানান, গত ৮ সেপ্টেম্বর হলিধানী এলাকায় ঋণের চাপে চিরকুট লিখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন সিরাজুল ইসলাম সুরুজ নামের এক চা দোকানী। পরবর্তীতে সিরাজুল ইসলাম সুরুজের স্ত্রী ছফুরা খাতুন বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি তদন্ত করে এজাহার নামীয় আসামী তরিকুলকে আমরা গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। বাকি আসামিদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo