যশোর ডাকাতিয়া গ্রামের ইয়াছিন বয়স ১৫, ডাকাতিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেনীতে পড়ালেখা করেন। দরিদ্র পরিবারের সন্তান ইয়াছিন পরিবারের হাল ধরতে লেখাপড়ার পাশাপাশি মা এর লোনের টাকায় কিনা রিকশা চালিয়ে কিস্তির টাকা পরিশোধ সহ পরিবারের ভরন পোষনের ও দায়িত্ব পালন করতেন।
প্রতিদিনের ন্যায় ২২ সেপ্টেম্বর তারিখে শহরে রিকশা নিয়ে বের হলে অপরিচিত এক যাত্রি তার রিকশা ভাড়া করে কোর্ট মোড়ে নেমে যায় এবং ইয়াছিন এর মোবাইল নাম্বার নিয়ে জানায় সে ব্যবসা করে প্রতিদিন তার রিকশা প্রয়োজন, তাই ঘন্টা চুক্তি ভাড়া চালাবে কি না।
ইয়াসিন তাতে রাজি হয়। পরের দিন ২৩ জুলাই তারিখে অপরিচিত আরোহি তার একটি নাম্বার থেকে ফোন করে ইয়াছিনকে, সে সময় ইয়াসিন স্কুলে ছিল। স্কুল ছুটি হলে দ্রুত রিকশা নিয়ে শহরে আসে এবং ঐ ব্যক্তির সাথে গাড়িখানা রোড়ে দেখা করে। সেখান থেকে রিকশা নিয়ে কোর্ট মোড় ঘুরে পুনরায় গাড়ি খানা রোডে স্যামসাং শো রুমের সামনে দাঁড় করিয়ে ব্যক্তিটি তিন তলায় যায়, লোকটি ছিল পা খোঁড়া। তিন তলা থেকে নীচে নেমে ইয়াসিন কে লোকটি বলে উপরে একটি স্টিলের মই আছে নিয়ে আসতে হবে। লোকটির পায়ে সমস্যা দেখে তার অনুরোধ ফেলতে পারে না ইয়াসিন। চাবি নিয়ে উপরে গেলে রিকশা নিয়ে চম্পট দেয় লোকটি। ইয়াসিন কান্না করতে করতে ছুটে আসে ডিবি অফিসে।
মানবিক এস আই মফিজুল তার ঘটনার বিস্তারিত শুনে ব্যক্তির মোবাইল নাম্বার ও সিসি টিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ৭২ ঘন্টার মধ্যে লোকটিকে সনাক্ত করে শংকরপুর গোলপাতা মোড় থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর বিকালে আটক করে জানতে পারেন তার নাম জাহাঙ্গীর বাড়ি অভয়নগর উপজেলার শুভরাড়া গ্রামে। শংকরপুর এলাকায় ভাড়া থাকে সে। জাহাঙ্গীর আরো জানায় রিকশাটি তার পূর্ব পরিচিত বাঘারপাড়া উপজেলার বাগুয়াড়ি গ্রামের শাহাদত হোসেন এর ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন এর নিকট ১৮ হাজার টাকায় বিক্রি করেছে। পরে তাকে নিয়ে আরেকটি রিকশা বিক্রির কথা বলে ডেকে জাহাঙ্গীর কে বসুন্দিয়া বাজার থেকে আটক করে ডিবি পুলিশ এবং তার স্বীকারোক্তি মতে জাহাঙ্গীর এর বাড়ি থেকে শিক্ষার্থী ইয়াসিন এর রিকশাটি উদ্ধার করে।রিকশাটির খোঁজ পেয়ে যেন একটি পরিবার জীবন ফিরে পেল।