ছোট সার্জারিতেও রোগীর মৃত্যু থামছে না

মোঃ আঃ রহিম জয় চৌধুরী প্রকাশিত: ২৭ ফেব্রুয়ারী , ২০২৪ ১৭:১১ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারী , ২০২৪ ১৭:১১ পিএম
ছোট সার্জারিতেও রোগীর মৃত্যু থামছে না
মেয়ে ফাতেমাকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা। গত বছরের নভেম্বরে রাজধানীর নয়াবাজার এলাকায় মেডিপ্যাথ হাসপাতালে মেয়ে ফাতেমার (১২) নাকের পলিপ অপারেশন করাতে নিয়ে যান তার মা। কিন্তু পলিপ অপারেশন করতে গিয়ে মৃত্যু হয় ফাতেমার।ফাতেমার মায়ের অভিযোগ, মেয়েকে সুস্থ, স্বাভাবিকভাবে তিনি হাসপাতালে নিয়ে যান। তাঁর মেয়ে কোনো অসুস্থ রোগী ছিল না। ফাতেমা তাঁর সঙ্গে হেঁটে হাসপাতালে যায়।

মেয়ে ফাতেমাকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা।

গত বছরের নভেম্বরে রাজধানীর নয়াবাজার এলাকায় মেডিপ্যাথ হাসপাতালে মেয়ে ফাতেমার (১২) নাকের পলিপ অপারেশন করাতে নিয়ে যান তার মা। কিন্তু পলিপ অপারেশন করতে গিয়ে মৃত্যু হয় ফাতেমার।ফাতেমার মায়ের অভিযোগ, মেয়েকে সুস্থ, স্বাভাবিকভাবে তিনি হাসপাতালে নিয়ে যান। তাঁর মেয়ে কোনো অসুস্থ রোগী ছিল না। ফাতেমা তাঁর সঙ্গে হেঁটে হাসপাতালে যায়।

এরপর গত ৩১ ডিসেম্বর খতনার জন্য রাজধানীর বাড্ডার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু আয়ানকে নিয়ে যায় তার অভিভাবক। সকাল ৯টার দিকে শিশুটিকে অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া হয়। তবে অনুমতি ছাড়াই ‘ফুল অ্যানেসথেসিয়া’ জেনারেল দিয়ে চিকিৎসক আয়ানের খতনা করান বলে অভিযোগ করা হয়। পরে জ্ঞান না ফেরায় তাকে গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। এরপর ৭ জানুয়ারি মধ্যরাতে চিকিৎসক আয়ানকে মৃত ঘোষণা করে।
সবশেষ গত মঙ্গলবার মালিবাগের জেএস ডায়াগনস্টিক সেন্টারে খতনা করাতে গিয়ে প্রাণ যায় আরেক শিশু আয়হামের। এ তিন ঘটনাতেই অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার পর আর জ্ঞান ফেরেনি শিশুদের। এসব ঘটনার সবগুলো বেসরকারি হাসপাতালে।

খতনা বা নাকের পলিপ অপারেশনের মতো ছোট সার্জারিতেও রোগীর মৃত্যু থামছেই না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর প্রধান কারণ অ্যানেসথিওলজিস্টদের দক্ষতার অভাব। এ ছাড়াও অ্যানেসথেসিয়ার আগে ঠিকমতো রোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করা এবং অপারেশন পরবর্তী জটিলতা মোকাবিলার সক্ষমতা না থাকাও মৃত্যুর অন্যতম কারণ বলছেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে আগামী রোববার সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।সোসাইটি অব অ্যানেসথিওলজিস্ট ক্রিটিক্যাল কেয়ার অ্যান্ড পেইন মেডিসিনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. কাওছার সরদার বলেন, ‘কতটুকু ঝুঁকি আছে সেটি নির্ণয়ের জন্য হার্ট, ফুসফুসসহ শরীরের অন্য অবস্থা কী সেটি অ্যাসেস করে একটি প্রি-অ্যানেস্থেটিক চেকআপ করাতে হয়। কিন্তু পেরিফেরাল যেসব ক্লিনিক আছে সেগুলোতে এই হার শূন্য।’

ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব সোসাইটিস অব অ্যানেস্থেসিওলজিস্টের মতে, প্রতি লাখ মানুষের জন্য অ্যানেসথিওলজিস্ট প্রয়োজন ৫ জন। কিন্তু দেশে অ্যানেসথিওলজিস্ট আছে দুই হাজারের কিছু বেশি, যা খুবই অপ্রতুল।ডা. কাওছার সরদার বলেন, ‘প্রায়ই দেখা যায়, এসব অঘটনগুলো যেখানে ঘটে সেখানে অ্যানেসথিওলজিস্ট নয় এই রকম ফিজিশিয়ান বা সে কোনো চিকিৎসকও না সে অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে দিচ্ছে।’  দেশে প্রতি বছর অ্যানেসথেসিয়া জটিলতায় কত মৃত্যু হয় তারও কোনো হিসাব নেই কারো কাছে।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo