দেশের অর্থনীতি দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও খেলাপি ঋণ-এই ত্রয়ীর কারণে ক্রমশ গভীর খাদের মুখে।
দেশের অর্থনীতি দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও খেলাপি ঋণ-এই ত্রয়ীর কারণে ক্রমশ গভীর খাদের মুখে। এজন্য অর্থনীতিতে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তা বহুদিন ধরেই আলোচিত। সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাহাড় পাহাড় দুর্নীতির খবরে গণমাধ্যমের ফ্রন্টপেজ দখল করে নিয়েছে। দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও খেলাপি ঋণ সমস্যা সমাধানে সময়ক্ষেপণ না করে এখনই বিশেষ কমিশন অথবা বৃহত্তর কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ সময়ের দাবি। দেশে দুর্নীতি বন্ধ করতে এখনই 'বিশেষ কমিশন' গঠনের জানানোর পাশাপাশি দুর্নীতিবাজদের অর্থসম্পদ বাজেয়াপ্ত ও বিচার করে কঠিন শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বস্তুত দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতি, দুর্নীতি, অর্থ পাচার, ব্যাংক খাতে লুট ও নৈরাজ্য, খেলাপি ঋণের বিশাল পাহাড় দিনের পর দিন দেশের অর্থনীতিতে সংকট বাড়িয়েছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে দেশের সব দুর্নীতিবাজকে আইনের আওতায় আনা জরুরি।প্রতিবছর দেশ থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে খেলাপি ঋণ আদায়ে যা যা করণীয়, এর সবই করতে হবে। খেলাপি ঋণ নিয়ে বছরের পর বছর আলোচনা হয়; খেলাপি ঋণ আদায়ে নানারকম উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। এত উদ্যোগ নেওয়ার পরও কেন এসব খাতে কাঙ্ক্ষিত সুফল পাওয়া যাচ্ছে না, তা তদন্ত করে দেখা দরকার। দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও খেলাপি ঋণের কারণে দেশে নানারকম সংকট সৃষ্টি হয়েছে, সেহেতু এসব সমস্যা সমাধানে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
অর্থ পাচারের একটি বড়ো কারণ দুর্নীতি। ঋণ খেলাপ করাও একধরনের দুর্নীতি। দুর্নীতি রোধ করা গেলে অর্থ পাচার ও ঋণ খেলাপি হওয়ার প্রবণতাও কমবে। মাত্রাতিরিক্ত খেলাপি ঋণ ও অর্থ পাচারের কারণে দেশের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের পন্থা খোঁজা জরুরি। এক্ষেত্রে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। অর্থ পাচারের পথগুলো শনাক্ত করতে হবে। কীভাবে, কোন কোন চ্যানেলে অর্থ পাচার হচ্ছে, তা সঠিকভাবে চিহ্নিত করে সেই ফাঁকগুলো বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। খেলাপি ঋণ আদায় এবং অর্থ পাচার রোধে যত পদক্ষেপই নেওয়া হোক না কেন, দুর্নীতি রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে সত্যিকারের সুফল মিলবে না। এজন্য ক্ষমতার শীর্ষ পর্যায়ের পৃষ্ঠপোষকতায় দুর্নীতিকে কঠোরভাবে দমন করতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার ফাঁকা বুলি না আওড়ে যথাযথ কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। নাহয় দেশ খাদের এমন গভীরে তলিয়ে যাবে, সেখান থেকে পুনরায় মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো দুরূহ হয়ে উঠবে।