নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় গত কয়েকদিন ধরে সকালে ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে চারিদিক। সঙ্গে বইছে হিমেল হাওয়া। স্থবির হয়ে গেছে জীবনযাত্রা। তবুও জীবিকার তাগিদে সাত সকালেই কেউ কেউ বেরিয়ে পড়ছেন নিজ নিজ কাজে। শৈত্যপ্রবাহ ও কনকনে ঠান্ডায় দিনের তাপমাত্রা অস্বাভাবিকভাবে নেমে পড়ায় জনজীবন যখন জবুথবু তখন গরু হাঁকিয়ে ও লাঙ্গল কাঁধে নিয়ে ঘন কুয়াশা ভেদ করে বোরোর মাঠে চলেছেন চাষি। শুরু করেছেন মাঠ প্রস্তুতের কাজ। আর শীতে কষ্ট কমাতে গরুর গায়ে কম্বল জড়িয়ে দিয়েছেন চাষি।
শুধু জীবন-জীবিকার তাগিদেই নয়, দেশকে ভালোবাসেন বলেই দেশকে কৃষিতে সমৃদ্ধি করতে চাষিদের এ যেন এক নীরব প্রচেষ্টা।
উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের রাজবংশীপাড়ার বোরোর মাঠে দেখা মিলে এমন এক চাষির। যিনি গরুর গায়ে নীল-সবুজ রঙের কম্বল জড়িয়ে বোরোর মাঠ তৈরি করছেন। গরুর প্রতি চাষির এ মানবিক আচরণ এখন এলাকার সব চাষির মুখে মুখে।
এই কৃষকের নাম রোজবুল। পার্শ্ববর্তী রাজবংশীপাড়ায় তার বাড়ি। ৪ সদস্যের সংসারে তিনিই একমাত্র আয় উপার্জন করেন।
তিনি জানালেন, চলতি বোরো মৌসুমে ৩ বিঘা জমিতে বোরোর চাষাবাদ করবেন তাই মাঠ প্রস্তুতের কাজ করছেন। শুধু তাই নয়, তিনি ভাড়ায়ও মানুষের জমিতে বোরোর মাঠ প্রস্তুত করে দেন। এ কারণেই ঘরে রেখেছেন দুটি বলদ গরু। বলতে গেলে বদল গরুর কারণেই আয়-রোজগারে চলে তার সংসার। সন্তানের মতো করেই আগলে রাখেন গরু দুটিকে। খাওয়ান ও দেখভাল করেন ভালো করে।
তিনি আরও বললেন, ওদেরওতো শীত লাগে, কষ্ট হয়'। তাই বিরাজমান এ কনকনে ঠান্ডায় দুটি কম্বল কিনে জড়িয়ে দিয়েছেন গরু দুটির গায়ে।
উপজেলার দামপুরা গ্রামের শিক্ষক রেজাউল ইসলাম সেলিম বলেন, বাংলার কৃষক মানেই কঠোর পরিশ্রমের প্রতিচ্ছবি। শীত- গরম-বৃষ্টিতেও থেমে থাকেনা তাদের কাজ। এই শীতে গরু দুটিকে কম্বল জড়িয়ে তিনি আসলেই মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন। তাঁকে অনেক ধন্যবাদ।